শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪২ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

ঈদের আগে সীতাকুণ্ডে হতাহতরা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহদের পরিবার ও আহতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ঘটনার এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সেই টাকার দেখা পাননি অনেকেই। এ নিয়ে হতাহতদের পরিবার অসন্তোষ প্রকাশ করলেও ডিপো কর্তৃপক্ষ বলছে, বাকিদের টাকা হস্তান্তরে আসন্ন ঈদুল আজহার পরও ৭-১০ দিন লেগে যেতে পারে।

গত ৪ জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিএম ডিপোতে প্রথমে আগুন এবং পরে দফায় দফায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রাসায়নিক দ্রব্য রাখা কনটেইনারগুলো একের পর এক বিস্ফোরিত হওয়ায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যা নিয়ন্ত্রণে আনতে ৮৬ ঘণ্টা পর লেগে যায়। ওই ঘটনায় সবশেষ বুধবার (৬ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে ডিপোর একটি শেডের ধ্বংসস্তূপ থেকে একজনের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।

এখন পর্যন্ত ৫১ জনের লাশ উদ্ধারের তথ্য জানিয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ  বলেন, এর মধ্যে ২৯টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। এসব লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরও করা হয়েছে। এখনও ২২ লাশের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। সেগুলোর ডিএনএ রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন স্বজনরা।

ওই ঘটনায় আহতদের অনেকে কিচিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরলেও এখনও প্রায় দুই ডজন মানুষ হাসপাতালে। তাদের চিকিৎসা চলছে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট এবং চট্টগ্রামের একাধিক হাসপাতালে। আহতদের স্বজনরা বলছেন, এবারের কোরবানির ঈদ হাসপাতালেই কাটাতে হবে।

চিকিৎসাধীন ও হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাওয়া বেশ কয়েকজন আহতের স্বজন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও পাননি। কোরবানির আগে পাওয়ার আশা করলেও তার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২০ জুন হতাহতদের মধ্যে তিন ক্যাটাগরিতে ৬৯ জনকে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের টাকা হস্তান্তর করে ডিপো কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে ৩১ জনই বিএম কনটেইনার ডিপোর কমকর্তা-কর্মচারী, ফায়ার সার্ভিসের ২৬ জন এবং অন্যান্য ৮ জন। বাকিদের মধ্যে মৃত ২০ জনের ক্ষতিপূরণ পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষা জটিলতায় আটকে আছে। অন্যদের তালিকা এখনও চূড়ান্ত করতে পারেনি ডিপো কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে বুধবার (৬ জুলাই) বিএম ডিপোর মালিকপক্ষ স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকীর কাছে জানতে চাওয়া হয়। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, কোরবানির ঈদের সপ্তাহখানেক পরে ডিএনএ পরীক্ষার ফল মিলতে পারে। এছাড়া আরও ৫০-৬০ জনের মতো ক্ষতিপূরণের টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এটি এখনও চূড়ান্ত নয়।

এখনও যারা ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি, তারা কবে নাগাদ পেতে পারেন— জানতে চাইলে শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, স্মার্ট গ্রুপের এমডি মজিবুর রহমান হজে গেছেন। তিনি ফিরলে ২০ জুলাইয়ের দিকে বাকিদের ক্ষতিপূরণের টাকা হস্তান্তর করা হতে পারে। পরবর্তীতে যাতে কোনও ঝামেলা না হয়, সে জন্য প্রক্রিয়াটিতে একটু দেরি হচ্ছে।

এর আগে গত ২৩ জুন স্মার্ট গ্রুপের জিএম শামসুল হায়দার সিদ্দিকী জানিয়েছিলেন, ফায়ার সার্ভিস ও ডিপোর হতাহত লোকজনের নথিপত্র থাকায় তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। বাকি চিকিৎসাধীন দগ্ধ বা আহতদের ক্ষেত্রে নথিপত্র যাচাই করা হচ্ছে। ডিপোতে প্রবেশের নথি দেখে সেটি নিশ্চিত করা গেলে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বুধবার (৬ জুলাই) অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ডিএনএ জটিলতায় থাকা ২০ জনের মধ্যে ৭ জনই বিএম ডিপোর কর্মকর্তা-কর্মচারী। এছাড়া বাকি আহতরা ঘটনার দিন কোন প্রতিষ্ঠানের হয়ে ডিপোতে এসেছে, সেটি যাচাই শেষ হয়নি। হতাহত সবার পরিচয় শনাক্ত হওয়ার চেষ্টা চলছে।

স্মার্ট গ্রুপ জানায়, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এখন পর্যন্ত দগ্ধ ৬৯ জনকে ৫ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। গত ২০ জুন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এই টাকা হতাহতদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ডিএনএ জটিলতায় মৃত ২০ জনের পরিবারের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের তিনজন বাদে ১৭ জনের পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে। একজনের দুই স্ত্রী দাবিদার, আরেকজনের নাম ভুল থাকায় টাকা দেওয়া যায়নি।

তিন ক্যাটাগরিতে ক্ষতিপূরণপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রে মৃত ২৬ জনের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ১৩ জনের পরিবারকে ১৫ লাখ করে, বিএম ডিপোর ৯ জন ও অন্যান্য ৪ জনের পরিবারকে ১০ লাখ করে টাকা দেওয়া হয়। অঙ্গহানি হওয়া ১৫ জনের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৯ জনকে ১০ লাখ করে, বিএম ডিপোর ৩ জন ও অন্যান্য ৩ জনকে ৬ লাখ করে টাকা দেওয়া হয়েছে। দগ্ধ বা আহত ২৩ জনের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৪ জন, বিএম ডিপোর ১৯ জন ও অন্য একজনকে ৪ লাখ করে টাকা দেওয়া হয়।

ভয়েম/আআ/বাংলা ট্রিবিউন

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION