সোমবার, ৩০ Jun ২০২৫, ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন
আবদুল আজিজ:
মিয়ানমার অভ্যান্তরে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরকান আর্মির গোলাগুলি চলছে। বেশকিছু দিন ধরে সীমান্তের পার্বত্য নাইকংছড়ি সীমান্তের মিয়ানমারের অভ্যান্তরে রাখাইন রাজ্যে গোলাগুলির এ তথ্য জানিয়েছেন নোম্যান্স ল্যান্ডে বসবাসরত রোহিঙ্গা সহ স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা। এনিয়ে সীমান্তে বসবাসকারী বাংলাদেশের বাসিন্দাদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।
সীমান্তের বিভিন্ন সুত্র বলছে, গত বেশ কয়েক দিন ধরে সীমান্তে নাইকংছড়ির তুমব্রু, ঘুমধুম, চাকঢালা থেকে শুরু করে বান্দরবানের মদক সীমান্ত পর্যন্ত এলাকায় মিয়ানমার অভ্যান্তরে প্রচন্ড গোলাগুলির শব্দ শুনা গেছে। এসব এলাকায় মিয়ানমারের বিদ্রোহী আরকান আর্মি নামে একটি সশস্ত্র গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। আরকান আর্মির সাথে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রায় সময়ই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে থাকে। একারণে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরকান আর্মির গোলাগুলি ঘটনা ঘটছে বলে ধারণা করছেন সীমান্তবাসি ও নোম্যান্স ল্যান্ডে বসবাসরত রোহিঙ্গারা।
নাইকংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ কক্সবাজার ভয়েসকে জানিয়েছেন, সীমান্তের ওপাড়ে মিয়ানমারে গোলাগুলির শব্দে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার বসবাসকারীরা বাসা বাড়িতে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। গোলাগুলির শব্দে ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে বসে কাজ করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশী বাসিন্দারা আতংকে রয়েছে। তিনি জানান,মিয়ানমারের সীমান্ত থেকে ক্ষনে ক্ষনে মর্টার শেলের শব্দ শুনা যাচ্ছে। তবে কারা এবং কেন গোলাগুলি করছে তা বুঝা যাচ্ছে না। তিনি বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি।’
নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বসবাসরত আবদুল করিম কক্সবাজার ভয়েসকে জানান, মিয়ানমার সীমান্তের ৩৬, ৩৭ ও ৩৮ নাম্বার পিলারের মিয়ানমারের অভ্যান্তরে শাহাব বাজার এলাকায় গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। এসব এলাকায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহী গ্রুপ আরকান আর্মির দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলি হচ্ছে বলে জানাগেছে।’
নাইক্ষ্যংছড়ি কোনারপাড়া নো ম্যান্স ল্যান্ডে বসবাস করছে প্রায় চার হাজার রোহিঙ্গা। সেখানে বসবাসকারী রোহিঙ্গা কমিউনিটি লিডার দিল মোহাম্মদ কক্সবাজার ভয়েসকে জানিয়েছেন, গত বেশ কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। মিয়ানমারের ওপারের সব এলাকায় আরকান আর্মি নামে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গ্রুপ বসবাস করে। তাদের সাথে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মধ্যে প্রায় সময়ই গোলাগুলি ও সংঘর্ষ হয়। গোলাগুলির শব্দে কেঁপে ওঠে নো ম্যান্স ল্যান্ডের রোহিঙ্গা ক্যাম্প।’
জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার বিজিবি ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে কর্নেল মেহেদী হোসাইন কবির ফোন রিসিভ করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। তবে তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মিয়ানমারের সীমান্তের অভ্যান্তরে রাখাইন এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গোলাগুলি যা হচ্ছে তা মিয়ানমারের অভ্যান্তরেই হচ্ছে। বাংলাদেশীদের মধ্যে আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই। সীমান্ত বিজিবির সদস্যরা এলার্ট রয়েছে। সীমান্তের যে কোন পরিস্থিতি নিয়ে বিজিবি সতর্ক রয়েছে।
ভয়েস/আআ