মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০২:০০ পূর্বাহ্ন
বিনোদন ডেস্ক:
হারিয়ে যেতে যেতেও ঘুরে দাঁড়ালেন তিনি। জ্বলে উঠলেন আপন দ্যুতিতে, তার দ্যুতি ছড়িয়ে গেল দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও- তিনি আজমেরি হক বাঁধন। বিখ্যাত কান চলচ্চিত্র উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনে প্রথম বাংলাদেশি সিনেমা হিসেবে জায়গা করে নেয় তার অভিনীত ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। তারপর বলিউডের ‘খুফিয়া’য় কাজ করলেন। হাতে রয়েছে দেশীয় বেশ কিছু প্রজেক্ট। গতকাল ছিল এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। বাঁধনের জন্মদিনে তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ভক্তরা অনেক কিছুই লিখেছেন। বাঁধনের গতকাল কেটেছে কাছের মানুষ আর ভক্তদের ভালোবাসায় স্নাত হয়ে।
এই বিশেষ দিনে অনেক অনেক শুভেচ্ছা বার্তার মাঝে তার হৃদয় ছুঁয়ে গেল একটি লেখা। লেখাটি শেয়ারও করলেন ভক্তদের সঙ্গে। বাঁধন জানালেন, ওই লেখকের সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় নেই তার, দূর থেকেই তিনি লিখেছেন বাঁধনকে নিয়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ওই লেখায় এমন কী লিখেছেন ব্যারিস্টার ও লেখক ইমতিয়াজ মাহমুদ? যা পড়ে আনন্দে আটখানা হলেন্ বাঁধন! চলুন পড়ে নেওয়া যাক-
ইমতিয়াজ মাহমুদ লিখেছেন, ‘আজমেরী হক বাঁধন একজন লোকপ্রিয় নায়িকা। তার ছবি দেশের জন্যে আন্তর্জাতিক সম্মান বয়ে এনেছে সে কথা তো সকলেই জানেন। তাকে আমি কেবল অভিনেত্রী অভিনয়শিল্পী বা ইংরেজিতে অ্যাক্টর না বলে নায়িকা বলতেই পছন্দ করবো-আর ইংরেজিতে হিরো। কেন? কেননা এই অভিনেত্রী কেবল তার পেশাগত ক্ষেত্রে অর্থাৎ অভিনয়ের ক্ষেত্রেই যে নায়কোচিত অগ্রসরতা দেখিয়েছেন সেটা তো কেবল নয়- নিজের জীবনে এবং সমাজের সর্বত্র তিনি একটা লড়াইয়ের অগ্রভাগে দাঁড়িয়ে লড়ছেন প্রতিদিন। ওকে তাইলে আপনি হিরো বলবেন না তো কি কেবল অভিনেত্রী অভিধায় সীমিত রাখবেন?’
বাঁধনের সংগ্রামী জীবনের উল্লেখ করে তিনি লিখেন, ‘নানাপ্রকার লড়াই তো আমাদের সকলকেই নিজেদের জীবনে লড়তে হয়। বাঁধনকেও লড়তে হয়েছে, প্রতিদিনই লড়তে হয়। আর যদি এই পোড়ার দেশে নারী হয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে কেউ তাইলে তো তার লড়াইটা শুরু হয়ে মায়ের গর্ভ থেকে বাইরে আসার সাথে সাথেই। কখনো কখনো তো মায়ের গর্ভে থাকতেই নারী শিশুটির টিকে থাকার লড়াই শুরু হয়ে যায়। বাঁধনও একজন নারী তাকেও তো লড়তে হবেই- এটাই তো স্বাভাবিক। তবু অন্য সকলের সাথে আমাদের এই হিরোর লড়াইয়ের একটা পার্থক্য রয়েছে। বাঁধন তার লড়াইটা জানেন, শত্রু মিত্র চেনেন এবং জানেন যে তার প্রতি যে আক্রমণ সেটা কেবল তার ব্যক্তিগত বিড়ম্বনা বা বিপদ মাত্র নয়, এটা হচ্ছে নারীর প্রতি পিতৃতন্ত্রের হাজার বছরের পুরনো আক্রমণ ও আঘাতেরই একটা অংশ মাত্র।’
ইমতিয়াজ আরও লিখেছেন, ‘বাঁধনের এই সচেতনতাই তাকে সংগ্রামের অগ্রভাগে স্থাপন করেছে, স্থাপন করেছে হিরোর আসনে। কি করে বুঝলেন এই কথাটা? লক্ষ্য করলেই দেখবেন বাঁধন তার সংগ্রামের কথাটা স্পষ্ট করে প্রকাশ্যে উচ্চারণ করেন। তিনি কেঁদে কেটে আপনার মায়া করুণা সহানুভূতি প্রার্থনা করেন না- তিনি তার সংগ্রামের কথা স্পষ্ট করে বলেন। ফেসবুকে লিখে বলেন, সাক্ষাৎকার ইত্যাদিতে বলেন, সভা সমিতিতে বক্তৃতা দিয়েও বলেন। এইভাবেই বিশ্বব্যাপী চলমান নারীর মুক্তির সংগ্রামে আমাদের এই ছোট দেশের ততোধিক ছোট ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একজন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন হয়ে দাঁড়ান একজন গুরুত্বপূর্ণ সেনাপতি।’
ভয়েস/জেইউ।