বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৪ পূর্বাহ্ন
খেলাধুলা ডেস্ক:
কোস্টারিকার বিপক্ষে জিতেও গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হলো চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে। টানা দুই আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিল জার্মানি। স্পেন হেরেও নিশ্চিত করেছে শেষ ষোলো। স্প্যানিশদের হারানো জাপান হয়েছে গ্রুপসেরা। ‘ই’ গ্রুপে ৬ পয়েন্ট জাপানের, স্পেনের ৪, জার্মানির পয়েন্টও একই। তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় হয় লুইস এনরিকের দল।
‘ই’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে গতকাল মুখোমুখি হয়েছিল স্পেন-জাপান এবং জার্মানি-কোস্টারিকা। জার্মানি ৪-২ গোলে কোস্টারিকার সঙ্গে জিতে নিজেদের কাজটা এগিয়ে রেখেছিল। তবে অন্য ম্যাচে জাপান ২-১ গোলে স্পেনকে হারায়।
খলিফা স্টেডিয়ামে ম্যাচের ১১ মিনিটে গোল করে স্পেনকে এগিয়ে দেন আলভারো মোরাতা। ৪৮ মিনিটে সেই গোল শোধ দেন জাপানের রিতসু দোয়ান। তিন মিনিটের মধ্যে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন অ্যাও তানাকা। শেষ পর্যন্ত সেটিই হয় জাপানের জন্য জয়সূচক গোল। টানা দ্বিতীয়বারের মতো শেষ ষোলো নিশ্চিত করল সূর্যোদয়ের দেশটি। ম্যাচে মাত্র ১৮ শতাংশ সময়ে বল দখলে ছিল জাপানের। গোলের উদ্দেশ্যে তারা শট নেয় ছয়টি, যার তিনটি ছিল লক্ষ্যে। স্পেনের ১২ শটের পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। জাপানের দ্বিতীয় গোলটি অবশ্য প্রথমে দেননি রেফারি। পরে ভিএআরে দেওয়া হয় গোল। এবং সেই গোলটি নিয়ে হতে পারে বিতর্ক।
আল বাইয়াত স্টেডিয়ামে জার্মানির বিপক্ষে ম্যাচের একপর্যায়ে ২-১ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল কোস্টারিকা। ফল যদি তেমনটি থাকত তবে স্পেনও বিদায় নিত। শেষ ষোলোতে উঠে যেত কোস্টারিকা। কিন্তু জার্মানি জেতায় সেই সমীকরণের সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়।
বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের শেষ গ্রুপ পর্বেই ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে জয় পেলে নিশ্চিত বেলজিয়ামের শেষ ষোলো। ড্র হলেও সম্ভব ছিল। তাতে যুক্ত ছিল শর্ত। সেই শর্তের মধ্যে ছিল কানাডার কাছে মরক্কোর হার। তবে হিসেব উল্টে দেয় আফ্রিকার দেশটি।
মরক্কো ২-১ গোলে হারায় কানাডাকে। তাতে ক্রোয়াটদের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেও কপাল পুড়ল বেলজিয়ামের সোনালি প্রজন্মের। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় হলো বেলজিয়ামের। ‘এফ’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোলোয় উঠেছে মরক্কো ও ক্রোয়েশিয়া।
গেল ১০ বছর ধরে একসঙ্গে খেলছেন থিবো কর্তোয়া, ইডেন হ্যাজার্ড, ডি ব্রুইনে, রোমেলু লুকাকুরা। তাদের এই দলটাকেই দেওয়া হয় বেলজিয়ামের ‘সোনালি প্রজন্ম’ ট্যাগ। এই সোনালি প্রজন্মের দলের বেশিরভাগের বয়স ৩০ পার হয়েছে। ফলে তাদের অনেকের শেষ বিশ্বকাপ ছিল এটি তা বলাই যায়। আর শেষটা হলো হতাশার। ২৪ বছর পর বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিল বেলজিয়াম। অথচ চার বছর আগে রাশিয়া বিশ্বকাপে তৃতীয় হয়েছিল বেলজিয়াম।
মূলত আগের ম্যাচে মরক্কোর কাছে ২-০ গোলে হারায় সমীকরণ কঠিন হয়ে গিয়েছিল বেলজিয়ামের। অবশ্য দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠার পথটা তাদের নিজেদের হাতেই ছিল। গতকাল ম্যাচের ৯০ মিনিটে লুকাকু যে মিসটি করেছেন, হয়তো সারা জীবন আক্ষেপে পুড়বেন এই স্ট্রাইকার। থরগান হ্যাজার্ডের ক্রস থেকে বল জালে জড়ানোর সুযোগ ছিল। কিন্তু বুক দিয়ে বল রিসিভ করে শটটা নিতে পারেননি। বল ধরে ফেলেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার। তার আগে ৬০ মিনিটে লুকাকুর শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ইনজুরির কারণে বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচ খেলতে পারেননি। গতকাল ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে নেমেছিলেন বদলি হিসেবে।
ম্যাচ শুরুর প্রথম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে আচমকা শট নিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার ফরোয়ার্ড ইভান পেরিসিচ। পোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে যায় সেটি। এরপর বলতে গেলে রক্ষণাত্মক খেলে ক্রোয়েশিয়া। কারণ ম্যাচটা ড্র করতে পারলেই শেষ ষোলো নিশ্চিত তাদের।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বেলজিয়াম কোচ রবার্তো মার্তিনেজ নিশ্চিত করেছেন, দলের সঙ্গে আর থাকছেন না তিনি। তার আগে মার্তিনেজ বলেন, ‘বিশ্বকাপে ম্যাচ জেতা সহজ নয়। আমরা প্রথম ম্যাচে নিজেদের মতো করে খেলতে পারিনি। দ্বিতীয় ম্যাচে হেরেছি নিজেদের দোষে। তবে আজ ভালো কিছু সুযোগ তৈরি করেছিলাম। আমরা ছিটকে গেছি।’
কানাডার বিপক্ষে জয় বা ড্র হলেই বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার সমীকরণ ছিল মরক্কোর সামনে। তবে কানাডার বিপক্ষে জয়ে ‘এফ’ গ্রুপে শীর্ষে থেকেই ১৯৮৬ সালের পর আবার শেষ ষোলোতে উঠল মরক্কো। আল থুমামা স্টেডিয়ামে ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই কানাডার গোলরক্ষক মিলান বোরিয়ান বড় ভুল করে বসেন। সেই ভুলের সুযোগে গোল করেন হাকিম জিয়েচ। ২৩ মিনিটে আশরাফ হাকিমির লম্বা পাস কাজে লাগিয়ে ব্যবধান ২-০ করেন ইউসেফ এন-নেসরি। তবে ৩৯ মিনিটে মরক্কোর নায়েফ আগুয়ের্দের আত্মঘাতী গোল করেন। তবে দ্বিতীয়ার্ধে লিড ধরে রেখে গ্রুপসেরা হয় মরক্কো।
ভয়েস/আআ