শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:১৯ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

করোনায় পাহাড়ের ফল চাষীদের মাথায় হাত

ভয়েস নিউজ ডেস্ক (২৫ এপ্রিল):

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশ কার্যত লকডাউনে। ফলে উৎপাদিত পণ্য পরিবহনে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এছাড়া স্থানীয় হাট-বাজার বন্ধ থাকায় লোকসানের মাত্রা আরও বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে রাঙামাটির পাহাড়ে মৌসুমি ফল চাষিদের ওপর। ফলন ভালো হলেও পাইকারি ক্রেতা ও স্থানীয় বাজারে দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন ফল চাষিরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত করোনার প্রভাবে গত দুই সপ্তাহ ধরে স্থানীয় বাজারে পাইকারি ক্রেতারা আসছেন না। আবার স্থানীয় ক্রেতারা ঘরবন্দি থাকায় তেমটা একটা ফল বিক্রি হচ্ছে না।
মৌসুমী ফল চাষিরা জানিয়েছেন, এ বছরও রাঙামাটিতে আগাম জাতের আনারসের ফলন ভালো হয়েছে। তবে বাজারে পাইকার না থাকায় বিক্রি করতেন পারছেন না ফল। আনাসর ছাড়াও রাঙামাটিতে তরমুজের ফলনও ভালো হয়েছে। তবে ক্রেতা না থাকায় ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে অনেক তরমুজ। এভাবে চললে ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলায় তুলনামূলকভাবে মৌসুমী ফলের আবাদ ভালো হয়েছে। এ বছর জেলায় ২১২৫ হেক্টর জমিতে ৬০ হাজার মেট্রিক টন আনারস উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে চাষিরা ফল বিক্রি করতে না পারলে ভালো ফলন সত্ত্বেও লোকসানের মুখে পড়বেন। গত ১০ দিন ধরে চাষিরা ফল বিক্রি নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন।
বুধ ও বৃহস্পতিবার সকালে জেলা শহরের সমতা ঘাটের বাজার পরিদর্শন করে দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আনারস চাষিরা ঘাটে ইঞ্জিনচালিত নৌকাভর্তি আনারস এনে বসে আছেন পাইকারি ক্রেতার অপেক্ষায়। তবে অন্যান্য বছর পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ফল কিনে থাকেন তাদের কাউকে দেখা যায়নি।
জেলা সদরের বন্দুকভাঙ্গা ইউনিয়নের আনারস বাগানের মালিক নীতিময় চাকমা বলেন, ‘আমি প্রায় ২ হাজার পিস আনারস এনেছি। কিন্তু দাম অনেক কম। করোনার প্রভাবে বেশিরভাগ পাইকার ব্যবসায়ী রাঙামাটির বাইরে থেকে আসতে পারেননি। তাই স্থানীয়রা কিছু নিলেও ভালো দাম দিয়ে বিক্রি করা যায়নি। সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে আগাম জাতের আনারসগুলো বাগানেই পচে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি গত সপ্তাহেও বাইরে থেকে আসা পাইকারি ক্রেতার কাছে প্রতি জোড়া আনারস বিক্রি করেছি ৩০-৪০ টাকা দরে। এখন প্রতি জোড়া আনারস মাত্র ১০-১৫ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যান্য বছর আগাম জাতের আনারস বিক্রি করেছি ২৫-৩০ টাকা দরে।’
দেশের আনারসের রাজধানী খ্যাত জেলার নানিয়ারচর থেকে আনারস নিয়ে আসা সুমন চাকমা বলেন, ‘আমি এ বছর ৫০ হাজার টাকা ব্যয় করে প্রায় দুই একর জমিতে আনারস চাষ করেছি। প্রথমধাপে কিছু আনারস বিক্রি করতে পেরেছি। তবে এখন দাম অনেক কমে গেছে। এমন চলতে থাকলে আমরা লোকসানে পড়বো।’
স্থানীয় পাইকার ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমি সাধারণত পাহাড়ি ফল সংগ্রহ করি এবং গুদামে মজুত করি। তবে এখন কয়েক সপ্তাহ ধরে করছি না। কারণ রাঙামাটিতে করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বড় পাইকাররা আসছেন না।’
রাঙামাটি ট্রাক মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপদি আইয়ুব আলী জানান, গতবছর এসময় প্রতিদিন ৮০-৯০ ট্রাক আনারস গেলেও বর্তমানে সেটি দাঁড়িয়েছে ১০-১২ ট্রাকে। ফলে ওই পেশায় জড়িতদের জড়িতদের ইনকাম বন্ধ।
এ প্রসঙ্গে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, এটি সত্য যে করোনাভাইরাসের প্রভাবে বহু ফল চাষি বিপাকে পড়েছেন। পচনশীল এসব মৌসুমি ফল সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে তারা অনেক টাকার ক্ষতির মুখে পড়বেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীদের রাঙামাটিতে ফল কিনতে আসতে উৎসাহ দিচ্ছি। তবে তারা আসছেন না। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেরিতে ফল পরিপক্ক হওয়ার জন্য বিশেষ হরমোন প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।সুত্র:বাংলাট্রিবিউন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION