রবিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০৭ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
চলতি বছরের শেষ নাগাদ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আরও ১৫ হাজার শিশু জন্ম নেবে। এসব শিশুদের সবাই ‘ক্রমবর্ধমান সহিংসতার মধ্যে গুরুতর ঝুঁকি’ এবং চিকিৎসা সেবা, পানিসহ খাদ্য সংকটের পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া সন্তান জন্মদানকারীদের মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ নারী প্রসবকালীন বিভিন্ন জটিলতার সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইসরায়েলি জাহাজ দেখলেই হামলার হুমকি হুথিদের
মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’। তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি এই খবর প্রকাশ করেছে।
জাতিসংঘের সাম্প্রতিক তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। জাতিসংঘের মতে, অবরুদ্ধ গাজায় প্রতিদিন প্রায় ১৮০ নারী সন্তান প্রসব করেন।
ওই বিবৃতিতে গাজায় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, সেখানে পর্যাপ্ত খাবার পানির সংকট, খাদ্য ও প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাব রয়েছে। স্তন্যদানকারী নারীরা পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছেন না। এরমধ্যে, তীব্র সংকটের সম্মুখীন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো হামলার শিকার হয়েছে। যা অন্তঃসত্ত্বা এবং নবজাতকসহ হাজার হাজার রোগীকে মৃত্যুর মুখে ফেলে দিয়েছে।
হাসপাতালগুলোর পরিস্থিতি নিয়ে গাজা উপত্যকায় সেভ দ্য চিলড্রেনের কর্মী মাহা শিফা বলেন, হাসপাতালের অবস্থা ভয়ংকর ছিল। বারান্দায় অন্তঃসত্ত্বা নারীরা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল। ইনকিউবেটরে অজ্ঞাত নবজাতক শিশু। যার পরিবারের কোনও সদস্যই জীবিত নেই। হাসপাতালে জ্বালানি ফুরিয়ে গেছে। আমি সেখান থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হই। আমি জানি না তারা বেঁচে আছে কিনা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, গাজার মোট ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে ২২টিই এখন ‘অকার্যকর’।
অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সেভ দ্য চিলড্রেনের কান্ট্রি ডিরেক্টর জেসন লি বলেন, একটি মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে শিশুরা। এ যেন এক দুঃস্বপ্ন। তাদের পরিবারগুলো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। চিকিৎসা সেবা ছাড়াই সন্তান জন্ম দিতে বাধ্য হচ্ছেন নারীরা। নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্ম নেয়া শিশুরা ইনকিউবেটরেই মারা যাচ্ছে।
এ সময় জেনারেটরগুলোকে সচল করতে গাজায় জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার এবং স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোকে হামলা থেকে সুরক্ষিত রাখার দাবি জানান তিনি।
৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকেই গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে বিমান ও স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ দেয়া তথ্যানুসারে, এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৩২০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের প্রায় ৭ হাজার ৮০০ জনই নারী ও শিশু। আর এ হামলায় আহত হয়েছে ২৯ হাজার ২০০ জনেরও বেশি।
ভয়েস/জেইউ।