বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০১:৫৪ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

থার্টিফাস্ট নাইট: কক্সবাজারে নেই আশানুরূপ পর্যটক

আবদুল আজিজ:
পুরনো বছরকে বিদায়, নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রতিবছর কক্সবাজারে লাখ পর্যটকের সমাগম হলেও এবার নেই আশানুরূপ পর্যটক। হোটেল-মোটেল, সমুদ্র সৈকত ও বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে নেই পর্যটকদের বিচারণ। রাজনৈতিক অস্থিরতা, ফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠানে বিধি-নিষেধ সহ নানা কারণে পর্যটক আসেনি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট্যরা। এরপরও যেসব পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমনে এসেছেন, তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ।

২০২৩ সালকে বিদায়, ২০২৪ সালকে স্বাগত জানাতে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আসার কথা লাখ পর্যটক। কিন্তু, এবারের ফাস্ট নাইট উদযাপনে নেই কোন আশানুরূপ পর্যটক। গত এক মাস ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা, থার্টি ফাস্ট নাইটের অনুষ্ঠানে বিধি-নিষেধ সহ নানা কারণে পর্যটক খরা কক্সবাজার। সমুদ্র সৈকতে কিছু পর্যটকের দেখা মিললেও জেলার অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রগুলো রয়েছে ফাঁকা। তবে ইতিমধ্যে যেসব পর্যটক থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনে কক্সবাজার ভ্রমনে এসেছেন, তারা বলছেন নানা প্রতিকূলের কথা।

রাজধানীর মগবাজার থেকে কক্সবাজার ভ্রমনে আসা পর্যটক দম্পতি রুবিনা ইয়াসমিন ও ফাহাদ চৌধুরী জানান, ‘থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনের জন্য কক্সবাজার এসে ভিন্ন দৃশ্য দেখলাম। সৈকতে অন্যান্য সময়ে তিল ধারণের জায়গা না থাকলেও এবার একদম ফাঁকা। নেই কোন কোলাহল।’

যশোর থেকে আসা পর্যটক মাহমুদুল ইসলাম জানান, ‘আমরা ৮বন্ধু এবার থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনে কক্সবাজারে এসে খুব হতাশ। কারণ, এখানে নেই কোন অনুষ্ঠানমালা। দুয়েকটি হোটেলের ইনডোরে অনুষ্ঠান হচ্ছে বলে শুনেছি। তবে সেখানে আমাদের যাওয়ার অনুমতি নেই।’

চট্টগ্রাম হালিশহর থেকে আসা রবিউল আলম ও স্ত্রী জেনিয়া আকতার জানান, ‘পুরনো বছরের অনেক স্মৃতি রয়েছে। জীবনের অনেক দু:খ, কষ্ট ধুয়েমুছে নতুন বছর শুরু করতে চায়। বিকালে পুরনো বছরের শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় দিয়ে নতুন সূর্যদয়ের অপেক্ষায় আছি।’

থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষ্যে প্রচুর পর্যটক সমাগমের আশায় থাকা সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন পর্যটন মৌসুম। তারপরও নতুন বছর উদযাপনের এই দিনে পর্যটক না আসায় হতাশা বিরাজ করছেন। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অনুষ্ঠানের উপর বিধি-নিষেধ আরোপ করায় পর্যটক বিমুখ হয়েছে এবার। এভাবে চলতে থাকলে আগামী দিন গুলোতে এ ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় যাওয়ার আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা।

পর্যটন ব্যবসায়ী আবদুর রহমান কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নিরাপত্তাজনিত কারণে সবধরণের অনুষ্ঠান বিধি-নিষেধ আরোপ করায় আশানুরূপ পর্যটক কক্সবাজারে আসেনি। অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা পর্যটন শিল্পের জন্য অশনি সংকেত। বিশেষ এবারের এত কম সংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে এসেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখেনি। এজন্য ব্যবসায়ীরা খুব লোকসানের মুখে পড়েছে।’

কক্সবাজার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: মুখিম খান কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, ‘থার্টিফাস্ট নাইট উপলক্ষে ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বেধেছিল। কিন্তু, সে আশা ধুলোবালিতে মিশে একাকার। মোদ্দা কথা, চলতি বছর জুড়ে পর্যটন ব্যবসায় শনির দশা কাটেনি। আমরা আশা করব নির্বাচনের পর যাতে পর্যটকে ভরপুর থাকে সেই স্বপ্ন দেখছি।’

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো: ইয়ামিন হোসেন কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, ‘থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপনে বিভিন্ন তারকা মানের হোটেলের ইনডোরে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়া হলেও রাজনৈতি পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোন ধরণের অনুষ্ঠানের অনুমতি দেয়া হয়নি। কোন ধরণের আঁতজবাজি, ফটকা সহ সব ধরণের অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত ডিআইজি মো: আপেল মাহমুদ কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, ‘থার্টিফাস্ট নাইট উদযাপনে যেসব পর্যটক ইতিমধ্যে কক্সবাজার ভ্রমনে এসেছেন তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তার কথা জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ। ট্যুরিস্ট পুলিশ বলছেন, তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টিম, থাকছে সাদা পোষাকধারি পুলিশ, সিসি ক্যামরা ও ড্রোন ক্যামরার ব্যবস্থা রয়েছে।

হতাশা নয়, আগামী বছরে সুন্দর পরিসরে কক্সবাজারে যাতে থার্টি ফাস্ট নাইট পালন করতে পারে এবং কক্সবাজার সহ দেশের পর্যটন জেলা গুলোতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, বিধি-নিষেধ আরোপে শিথিলতা ও নানা সুযোগ সুবিধা বাড়ানো হলে পর্যটন শিল্পে বিকাশ ঘটবে, এমনটি মনে করছেন সচেতন মহল।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION