বুধবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন
বশির আল মামুন, চট্টগ্রাম ব্যুরো:
একদিনের ব্যবধানে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে ফিরলেন জেলেরা। চট্টগ্রামের ফিশারি ঘাটে চলছে যেন ইলিশ উৎসবের আমেজ । ২৫ জুলাই (শনিবার) সকালে দেখা গেছে কর্ণফুলী নদীর ফিসারী ঘাটে ভিড়েছে অনেক মাছ ধরা ট্রলার। ট্রলার থেকে খাঁচা বোঝাই করে ইলিশ মাছ নামাচ্ছে। আর সে মাছগুলি নিয়ে আসছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বৃহত্তম মাছের আড়ত শতবছরের ঐতিহ্যবাহী ফিশারি ঘাট বাজারে। তাদের চোখে মুখে খুশির ঝিলিক। হাতে হাতে ইলিশ বোঝাই খাঁচা। চারদিকে রূপালি ইলিশের ছড়াছড়ি। দম ফেলার ফুসরত নেই কারও।
জানাগেছে গত ২০ মে থেকে ৬৫ দিন সামুদ্রিক মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও আহরণ নিশ্চিতে সাগরে সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারী করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ২৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) রাত ১২ টায় শেষ হয়। এরপর ইলিশ, লইট্টাসহ নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছের ধরার জন্য ট্রলার, ফিশিং বোট নিয়ে সাগরে বেরিয়ে পড়েন চট্টগ্রামের প্রায় ১৫০০ জেলে। পুরোদিন সাগরে মাছ ধরার পর শুক্রবার মধ্য রাতে প্রথমবারের মতো কিছু জেলে ২৫-৩০টি ইলিশ বোঝাই ট্রলার, ২০-২৫টি লইট্টা মাছ বোঝাই ট্রলার এবং ৫টি অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ বোঝাই ট্রলার নিয়ে ফিশারি ঘাটে ফেরেন। শনিবার সকালে ট্রলার থেকে ইলিশসহ এসব সামুদ্রিক মাছ আড়তে নিয়ে আসা হয়। পুরো ফিশারিঘাটের ‘দখল’ নেয় মাছের রাজা ইলিশ।
এদিন ৭০০-৮০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি মন ১৮ হাজার, ৫০০-৬০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি মন ১৪ হাজার টাকায় এবং এর চেয়ে ছোট ইলিশ প্রতি মন ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হয় ফিশারি ঘাটে।
লইট্টা মাছ বড়, মাঝারি এবং ছোট- এই তিন আকারভেদে কেজি প্রতি ৮০, ৭০ এবং ৬০ টাকায় বিক্রি করেন আড়তদারেরা। মাইট্টা মাছ কেজি প্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, চইখ্যা মাছ কেজি প্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয় ফিশারি ঘাটে।
কয়েকটি আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, ট্রলার থেকে ইলিশ নিয়ে আড়তে সাজিয়ে তা বাজারজাত করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রান্তে। জেলেদের ধরা ইলিশ আড়তে তুলে হাঁকডাক দেওয়া হচ্ছে। নির্ধারিত দামে সেসব ইলিশ কিনে নিচ্ছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ক্রেতারা। এরপর দূর-দূরান্তে নেওয়ার জন্য ড্রামে সংরক্ষণ করা হচ্ছে মাছগুলো।
জেলেদের হাত থেকে আড়তদার, সেখান থেকে পাইকার এবং বেপারিদের হাত ঘুরে এসব মাছ চলে যাচ্ছে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কাঁচা বাজারে।
ফিশারি ঘাটের সোনালি যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আলী জানান, সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সাগরে থেকে মাছ নিয়ে ফেরায় ফের কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে ফিশারি ঘাট।তিনি বলেন, প্রথম দিন ইলিশসহ কিছু সামুদ্রিক মাছ চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারের মাছ বিক্রেতারা কিনেছেন। বাকি মাছ কোল্ড স্টোরেজে রাখা হচ্ছে।
ফিশারি ঘাটের জেলে মানিক দাশ জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ভয়ে ক্রেতা কিছুটা কম। মাছের দামও আশানুরূপ মিলছে না। তিনি বলেন, প্রায় দুই মাস ঘরে কাজহীন বসে থাকার পর সাগরে যেতে পারায় আমরা খুশি। আশা করছি- রূপালি ইলিশ আমাদের অভাব ঘুচাবে।
ভয়েস/আআ