রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৩:৫০ পূর্বাহ্ন
নাহার সুলতানা:
গরমে হাঁসফাঁস। স্বস্তি পেতে অনেকেই ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে পান করছেন। কিন্তু সরাসরি ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের করে পান করতে নিষেধ করছেন ডাক্তাররা। রক্ত তৈরি থেকে শুরু করে বিপাকের হার নিয়ন্ত্রণ, খাদ্য হজম, উৎসেচক তৈরি, ক্ষতিকর পদার্থকে দেহ থেকে বের করে দেওয়াসহ আমাদের শরীরের প্রায় সব কাজেই পানির প্রয়োজন। তাই শরীর হাইড্রেট রাখতে ও সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে চাইলে শরীরের চাহিদা অনুযায়ী পানি পান করতেই হবে। গ্রীষ্মকালে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা খুবই জরুরি। না হলে পানিশূন্যতার মতো জটিল অসুখ বাসা বাঁধতে পারে।
গরমের মধ্যে বাইরে থেকে ফিরেই সরাসরি ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানি বের পান করা যাবে না। যারা এই কাজটি করবেন তাদের ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা বাড়বে। এছাড়া গরমে সর্দি-কাশির মতো সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। এর পরিবর্তে ঘরের তাপমাত্রায় থাকা পানি পান করা ভালো। যদি ঠান্ডা পানি পান করতেই হয় তাহলে সরাসরি ঠান্ডা পানি পান না করে ঠান্ডা পানির মধ্যে কিছুটা পরিমাণে ঘরের তাপমাত্রায় থাকা পানি মিশিয়ে পান করতে পারেন। তাতে খুব একটা সমস্যা হবে না। গরমের দিনেও সকালে নিয়ম করে কুসুম গরম পানি পান করা ভালো। এটা নিয়মিত করলে খুব সহজেই পেট পরিষ্কার হয়ে যাবে। এমনকি হজম ক্ষমতাও বেড়ে যাবে। ফলে কথায় কথায় আর গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যাও হবে না।
আমাদের রক্তের ৮৩ ভাগ, হাড়ে ২২ ভাগ, মস্তিষ্কে ৭৪ ভাগ, পেশিতে ৭৫ ভাগ পানি থাকে, অর্থাৎ আমাদের শরীরের দুই-তৃতীয়াংশই হচ্ছে পানি। শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর সঠিক ভাবে পরিচালনার জন্যও প্রয়োজন পানি। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি (দুই লিটার) পান করা উচিত। ৪ থেকে ৮ বছরের শিশুদের দিনে ১ দশমিক ১ লিটার থেকে ১ দশমিক ৩ লিটার পানি পান করাতে হবে। আর ৯ থেকে ১৭ বছর বয়সীরা দিনে ১ দশমিক ৩ থেকে ১ দশমিক ৫ লিটার পর্যন্ত পানি পান করা প্রয়োজন।
পর্যাপ্ত পানি পানে কিডনি, যকৃৎ, হৃৎপিন্ড ও মস্তিষ্ক ভালো থাকে। শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। পানি শরীরের ভেতরের কোষগুলোকে সবল ও স্বাভাবিক রাখে। পানি পানের ঘাটতি দেখা দিলে এই কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই বিশুদ্ধ পানি পানের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। পানি বিশুদ্ধ না হলে ডায়রিয়া, কলেরা ও টাইফয়েডের মতো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চিকিৎসকদের মতে খাবার খাওয়ার কম করে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর পানি পান করা উচিত। না হলে হজমে সহায়ক পাচক রসের কর্মক্ষমতা কমতে শুরু করে। ফলে হজম ঠিক মতো না হওয়ার কারণে বদহজম এবং গ্যাস-অম্বলের মতো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
ভয়েস/আআ