শনিবার, ২৮ Jun ২০২৫, ০৪:০২ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
নিয়ন্ত্রণে এসেছে বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়ায় এলপিজিবাহী জাহাজের আগুন। তবে এখনো আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি। বন্দরের চারটি উদ্ধারকারী জাহাজ, মাদার ভেসেলের (বড় জাহাজ) নিজস্ব টাগবোট এবং নৌ বাহিনী ও কোস্টগার্ডের টিম আগুন নেভানোর কাজ করছে।
এদিকে লাইটারেজ (ছোটো জাহাজ) জাহাজ সোফিয়ার ৩১ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। একইসাথে মাদার ভেসেল ‘ক্যাপটেইন নিকোলাস’ থেকেও উদ্ধার করা হয়েছে ২৭ জন নাবিককে। সবাই এখন বিপদমুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রন কক্ষের মঈনুল ইসলাম সকাল ১১টার দিকে দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘ আগুন এখন প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। তবে পুরোপুরি নিভেনি। জাহাজে থাকা সব নাবিককে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।’
বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়ায় এলপিজিবাহী (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) জাহাজে গতকাল রাত একটার সময় আগুন লাগে। ‘ক্যাপ্টেন নিকোলাস’ নামের মাদারভেসেল (বড় জাহাজ) থেকে শিপ টু শিপ পদ্ধতিতে ‘এলপিজি সোফিয়া’ জাহাজে (ছোটো জাহাজ) এলপিজি স্থানান্তরের সময় এই আগুন লাগে।
‘ক্যাপ্টেন নিকোলাস’ জাহাজটি গত ৬ অক্টোবর ওমান থেকে এলপিজি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের আওতাধীন কুতুবদিয়া এলাকায় নোঙ্গর করে। এ সময় জাহাজটিতে ৪২ হাজার ৯৭৫ মেট্রিকটন এলপিজি ছিল। এসব এলপিজি লাইটার জাহাজে করে ভাটিয়ারিতে নিয়ে আসার কাজ চলছিল। জাহাজটিতে আগুন লাগার বিষয়ে রাত ১টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রাম বন্দরের নিয়ন্ত্রন কক্ষ সূত্র জানায়, আগুন লাগার পরপরই আগুন নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন টিম ঘটনাস্থলের দিকে রওয়ানা দিয়েছে।
এদিকে মাদারভেসেলে আগুন লেগেছে কিনা জানতে চাইলে একজন শিপিং এজেন্ট জানায়, দুটো জাহাজ পাশাপাশি লাগানো ছিল। এ সময় মাদার ভেসেলেও আগুন লাগে। তবে আগুন লাগার পরপরই উভয় জাহাজকে পৃথক করিয়ে নেয়া হয়। কিন্তু এতে কি পরিমাণ আগুন লেগেছে তা বলা যাচ্ছে না।
নিকোলাস জাহাজটি নিয়ে অভিযোগ ছিল এটি ইরান থেকে এলপিজি নিয়ে এসেছে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরের তদন্ত টিম এর কোনো সত্যতা পায়নি। এখন সেই জাহাজেই আগুন লাগার ঘটনা ঘটলো। ক্যাপ্টেন নিকোলাস জাহাজের এজেন্ট এবং সিওয়েভ মেরিন সার্ভিসেসের প্রধান নির্বাহি শেখ মোহাম্মদ ছামিদুল হক দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘যেহেতু মাদার ভেসেল ও লাইটার জাহাজ পাশাপাশি লাগোয়া ছিল তাই মাদার ভেসেলেও আগুন লেগেছে বলে শুনেছি।’
কুতুবদিয়ায় নোঙ্গর করা ‘গ্যাস জিএমএস’ ও ‘ক্যাপ্টেন নিকোলাস’ এই দুই জাহাজ ইরান থেকে এলপিজি নিয়ে এসেছে বলে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন এলপিজি অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে ক্যাপ্টেন নিকোলাস জাহাজের এজেন্ট এবং সিওয়েভ মেরিন সার্ভিসেসের প্রধান নির্বাহী শেখ মোহাম্মদ ছামিদুল হক বলেছিলেন, ‘ আমরা ইরান থেকে কোনো এলপিজি ক্রয় করিনি। আমরা ওমান থেকে পণ্য লোড করেছি।’
উল্লেখ্য, শিপ টু শিপ পদ্ধতিতে এলপিজি ট্রান্সফার করা খুবই ঝুকিপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে এই পদ্ধতিতে জাহজগুলো এলপিজি ট্রান্সফার করে আসছিল। এর আগে সম্প্রতি বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের অয়েল ট্যাংকার “এমবি বাংলার জ্যোতি” ডলফিন জেটিতে নোঙ্গর থাকা অবস্থায় আগুন লাগে এবং পরবর্তীতে বন্দরের বহি:নোঙ্গর ‘এমটি বাংলার সৌরভে’ আগুন লাগে। উভয় জাহাজে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
ভয়েস/আআ