শনিবার, ২৮ Jun ২০২৫, ০৬:২১ অপরাহ্ন
খেলাধুলা ডেস্ক:
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের চুক্তি ছিল আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরেই শ্রীলঙ্কান এই কোচের চাকরি ঝুলে গিয়েছিল। বিসিবির নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে নিজের প্রথম সংবাদ সম্মেলনেই ফারুক আহমেদ সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, হাথুরুর বিকল্প কোচ খোঁজার কথা। অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। টাইগার কোচিং প্যানেল থেকে বরখাস্ত হলেন ৫৬ বছর বয়সি এই কোচ।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ হাথুরুসিংহেকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, আইনগত কিছু বিষয় থাকায় শুরুতে হাথুরুকে শোকজ ও সাসপেন্ডের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। তারপরেই চুক্তি বাতিলের বিষয়টি আসবে। সব মিলিয়ে চুক্তির মেয়াদ শেষের আগেই তার বাংলাদেশ অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটছে।
মূলত জাতীয় দলের ক্রিকেটারের সঙ্গে অসদাচরণ ও আচরণবিধি ভাঙার দায়েই হাথুরুকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আগামী ২১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে টাইগার শিবিরে থাকছেন না হাথুরু। তার জায়গায় অন্তর্বর্তী কোচ হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল সিমন্সকে নিয়োগ দিয়েছে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বর্তমান কোচের ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছিলাম মানিয়ে নিতে। দুই-তিনটা ঘটনা ঘটেছে। ইচ্ছেমতো ছুটি কাটানো, জাতীয় দলের খেলোয়াড়ে গায়ে হাত তোলার মতো ঘটনা কোনোভাবেই দলের জন্য ভালো উদাহরণ ছিল না। তাই তাকে ৪৮ ঘণ্টার শোকজ ও সাসপেনশন দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এটা স্থায়ী হয়ে যাবে।’
বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ হিসেবে এটা ছিল হাথুরুসিংহের দ্বিতীয় অধ্যায়। প্রথম মেয়াদে ছিলেন ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত। সেবার হাথুরুসিংহে নিজেই কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথে তিনি ই–মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। সেবার তাঁর সঙ্গে চুক্তি ছিল ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত।
সেই সময়ে আলোচনা ওঠে, কোনও ক্রিকেটার বা বোর্ড কর্তার সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের কারণেই হয়ত বাংলাদেশ ছাড়েন হাথুরু। যদিও বাংলাদেশের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার মাসখানেক পরই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন হাথুরুসিংহে। ২০২৩ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসেন শ্রীলঙ্কার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তবে চুক্তির মেয়াদ শেষের আগেই বাংলাদেশ অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটছে এবারও।
দ্বিতীয় মেয়াদে হাথুরুর অধীনে ১০টি টেস্ট, ৩৫টি ওয়ানডে ও ৩৫টি টি–টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। টেস্টে হারজিত সমানে সমান—৫টি জয় ও ৫টি হার। তবে ওয়ানডেতে ফল ছিল হতাশাজনক—৩৫ ম্যাচে ১৩টি জয়, হার ১৯টি, ৩ ম্যাচে ফল হয়নি। টি–টোয়েন্টিতে ৩৫ ম্যাচের ১৯টিতে জিতেছে বাংলাদেশ, হেরেছে ১৫টি, একটিতে ফল হয়নি।
ভয়েস/জেইউ।