মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:৪৭ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

মানুষের গোপনীয়তা রক্ষায় ইসলামের নির্দেশনা

ফয়জুল্লাহ রিয়াদ:
প্রাইভেসি বা গোপনীয়তা মানুষের মৌলিক অধিকার। মানব জীবনের প্রাইভেসি সম্পর্কে ইসলামের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা। কারও দোষ অন্বেষণ কিংবা প্রাইভেসি নষ্ট করা কবিরা গুনাহ। আল্লাহতায়ালা ইমানদারদের এমন গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘হে ইমানদাররা, তোমরা অধিক ধারণা করা থেকে বেঁচে থাকো। নিশ্চয় কতিপয় ধারণা পাপ। তোমরা একে অপরের গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না।’ (সুরা হুজুরাত ১২)

পরিচিত অপরিচিত যে কারও ঘরে প্রবেশ করার আগে অনুমতি নেওয়া ইসলামের অত্যাবশ্যকীয় বিধান। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ইমানদাররা, তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারও ঘরে অনুমতি নেওয়া এবং সালাম প্রদান ছাড়া প্রবেশ কোরো না। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ করো। যদি তোমরা ঘরে কাউকে না পাও, তবে অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত প্রবেশ করবে না। যদি তোমাদের বলা হয় ফিরে যাও, তবে তোমরা ফিরে যাবে। এটাই তোমাদের জন্য উত্তম।’ (সুরা নুর ২৭-২৮)

মানুষের দোষত্রুটি অন্বেষণের মাধ্যমে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়। অনেক সময় এ ক্ষতির পরিমাণ হয় সীমাহীন। হজরত মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ান (রা.)-এর সূত্রে বর্ণিত হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তুমি যদি মানুষের গোপন দোষত্রুটির অনুসন্ধান করো, তাহলে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে বা ক্ষতির সীমানায় পৌঁছে দেবে।’ (সুনানে আবু দাউদ) অপর এক হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুসলমানদের গিবত কোরো না এবং তাদের দোষত্রুটি অন্বেষণ কোরো না। যে ব্যক্তি মুসলমানদের দোষত্রুটি অন্বেষণ করে, আল্লাহতায়ালা তার দোষত্রুটি অন্বেষণ করেন। আর আল্লাহ যার দোষত্রুটি অন্বেষণ করেন, তাকে নিজ গৃহেও লাঞ্ছিত করে দেন।’ (সুনানে আবু দাউদ)

কারও দোষত্রুটি অন্বেষণ তো বটেই, অপরের ঘরে উঁকিঝুঁকি দেওয়াও ইসলাম ধর্মে নিষিদ্ধ। হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) বলেন, ‘একবার এক ব্যক্তি মহানবী (সা.)-এর ঘরে উঁকি দেয়। সে সময় তার হাতে একটি চিরুনি ছিল, যা দিয়ে তিনি মাথা চুলকাচ্ছিলেন। মহানবী (সা.) তাকে লক্ষ্য করে বলেন, আমি যদি জানতাম তুমি উঁকি দেবে, তবে এটা দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। চোখের জন্যই অনুমতির বিধান দেওয়া হয়েছে।’ (সহিহ মুসলিম)

মহানবী (সা.) সফর থেকে ফিরে এসে সরাসরি ঘরে প্রবেশ করতেন না। তিনি প্রথমে মসজিদে যেতেন। স্ত্রীদের ঘরে নিজের আগমনী বার্তা পাঠাতেন। এরপর আস্তে-ধীরে ঘরে প্রবেশ করতেন। এটা এ জন্য করতেন, যেন স্ত্রীরা নিজেদের পরিপাটি করে নিতে পারেন। কাউকে যেন তিনি অনাকাক্সিক্ষত অবস্থায় দেখে না ফেলেন। কারও প্রাইভেসি যেন নষ্ট না হয়।

এজন্য মুসলমানদের ওপর আবশ্যক হলো, অপরের দোষত্রুটির অন্বেষণ না করা। কারও ব্যাপারে মন্দ কিছু জানা থাকলেও সেটা গোপন রাখা। কারও সামনে তা প্রকাশ না করা। এর বিনিময়ে পরকালে আল্লাহতায়ালা তার সব দোষত্রুটি গোপন রাখবেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ইহকালে কোনো মুসলমানের দোষত্রুটি গোপন রাখবে, আল্লাহতায়ালা কেয়ামত দিবসে তার দোষত্রুটি গোপন রাখবেন।’ (সহিহ বুখারি)

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION