শুক্রবার, ২৭ Jun ২০২৫, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
কিছুটা স্বস্তি ফিরছে পেঁয়াজ, আলু ও সবজির বাজারে। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ২০ টাকা ও আলুতে ১০ টাকা দাম কমেছে। অন্যদিকে চাল ও মুরগির দাম খানিকটা বেড়েছে। খুচরা দোকানে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ বাড়লেও নাগালে আসেনি দাম।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, একদিকে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে, ভরা মৌসুমের মধ্যেও খুচরা পর্যায়ে চালের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে অন্তর্বর্তী সরকার কয়েকটি পণ্য আমদানিতে শুল্ক কর ছাড় দেওয়ার কারণে পণ্যের আমদানি কিছুটা বেড়েছে। এতে সরবরাহ বাড়ছে বাজারে, যা পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখছে ইতিবাচক ভূমিকা।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মহাখালী কাঁচাবাজার, তেজগাঁও কলোনি বাজার ও কারওয়ান বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে; একই সঙ্গে পাতাসহ পেঁয়াজও পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া নতুন আলুর সরবরাহও বেড়েছে। এসব কারণে আলু ও পেঁয়াজের দাম কমছে।
বিক্রেতারা বলছেন, সাধারণত নভেম্বরের শেষ দিকে মুড়িকাটা পেঁয়াজ এবং ডিসেম্বরের শুরুর দিকে আলু বাজারে আসতে শুরু করে। তবে চলতি বছর বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে আলু-পেঁয়াজের বীজ বুনতে দেরি করেন কৃষকেরা। এ কারণে বেশ কিছুদিন পণ্য দুটি বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছিল। এখন নতুন পেঁয়াজ ও আলু আসতে শুরু করায় এ দুই পণ্যের দাম কমছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে দেশি পুরোনো, স্থানীয় মুড়িকাটা এবং আমদানি করা—এই তিন ধরনের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে প্রতি কেজি পুরোনো দেশি পেঁয়াজ ৯০-১১০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম আরও কম; এক কেজির দাম ৭০-৮০ টাকা। এ ছাড়া পাতাসহ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে। দুই সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ (পুরোনো) ১১০-১৩০ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
এদিকে আমনের ভরা মৌসুমের মধ্যেও খুচরা পর্যায়ে চালের দাম কেজিতে ২-৫ টাকা বেড়েছে। পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মিল পর্যায়ে চালের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। তবে চালকলের মালিকদের দাবি, ধানের দাম বাড়ায় তারা চালের দাম বাড়িয়েছেন।
কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে সবজির বাজারে। ধরনভেদে প্রতি কেজি শিম ৪০-৮০ টাকা, মুলা ২০-৩০ টাকা, শালগম ৪০-৫০ টাকা, করলা ৬০-৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৬০-১০০ টাকা, টমেটো ১০০-১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৩০-৫০ টাকা এবং লাউ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে দুই সপ্তাহ আগে পুরোনো আলুর দাম কেজিপ্রতি ছিল ৮০ টাকা। নতুন আলুর সরবরাহ বাড়ায় দাম ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বর্তমানে নতুন ও পুরোনো উভয় ধরনের আলু ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সংকট ছিল। খুচরা দোকানগুলোতে এখন বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে; তবে এখনো পরিস্থিতি পুরো স্বাভাবিক হয়নি। ৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ানো হয়। আশা করা হয়েছিল, তেলের সরবরাহ দ্রুত বাড়বে; কিন্তু তা হয়নি।
মুদি দোকানি হারুন বলেন, ‘ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো পুরোদমে তেল সরবরাহ করছে না। তেল পেতে ডিলারদের সঙ্গে একধরনের তর্ক-ঝগড়া করতে হচ্ছে। এরপরও যা পাচ্ছি, তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।’
ভয়েস/জেইউ।