বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৩:২০ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

দুর্নীতি মামলায় সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর কারাগারে

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার (এস কে) সুর চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন।

দুদকের সরকার কৌঁসুলি (পিপি) মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, এস কে সুরের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ’ সম্পদের তথ্য পেয়েছে দুদক। তাকে দুদকে ডাকা হলে তিনি হাজির হননি। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

মাহমুদ হোসেন বলেন, এদিন এস কে সুরকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

দুদকের একটি দল রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নরকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সাংবাদিকদের বলেছেন সংস্থার উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম।

কারাগারে আটক রাখার আবেদনে দুদকের উপপরিচালক নাজমুল হোসাইন বলেছেন, এস কে সুরের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ’ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ ওঠে। তার নিজের ও তার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে বেনামে অর্জিত সব স্থাবর অস্থাবর সম্পদ, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণী দাখিলের আদেশ দেওয়া হয়।

তিনি ২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর নিজ স্বাক্ষরে সেই আদেশ ও সম্পদ বিবরণী ফরম গ্রহণ করেন। কিন্তু আদেশ পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি।

সে কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়, যা বর্তমানে তদন্তাধীন আছে।

ক্ষমতার পালাবদলের পর ২০২৪ সালে ২৩ ডিসেম্বর ‘আর্থিক অনিয়মের’ অভিযোগে আলোচিত এস কে সুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

তার আগে সে বছর ২৮ অগাস্ট এস কে সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেয় আদালত।

পি কে হালদারের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২২ সালে এস কে সুরের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। ওই বছরের মার্চে তাকে দুদকে তলব করা হয়।

এর ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের অগাস্টে এস কে সুর ও তার পরিবারের ব্যাংক লেনদেনের তথ্য চেয়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুদক।

এস কে সুর চৌধুরী ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ডেপুটি গভর্নরের পদ থেকে অবসরে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি অবসরে রয়েছেন।

অভিযোগ আছে, এস কে সুর ডেপুটি গভর্নর থাকাকালে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ‘সহযোগিতা’ করেছেন এবং ‘সুবিধা’ নিয়েছেন।

পি কে হালদারের কেলেঙ্কারিতে নাম আসায় ২০২১ সালের জুলাইয়ে এস কে সুর ও তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দেয় এনবিআর।

সে বছর ১৫ মার্চ হাই কোর্ট এক এক আদেশে প্রশ্ন তোলে, এস কে সুর চৌধুরীকে কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।

তবে ২০২২ সালের ২৯ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হওয়ার পর তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।

পিকে হালদার নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।

এসব কোম্পানি থেকে তিনি ঋণের নামে বিপুল অংকের টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন এবং এ কাজে বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তার ‘যোগসাজশ’ ছিল বলে তদন্তকারীদের ভাষ্য। পিকে হালদারের বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও দায়ের করেছে দুদক।

দেশ ছাড়ার পর দুই বছর আগে ভারতে গ্রেপ্তার হন পি কে হালদার। গত সপ্তাহে অর্থ পাচারের এক মামলায় তাকে জামিন দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের একটি আদালত।
ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION