রবিবার, ২৯ Jun ২০২৫, ১১:৩৬ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
সরকার ‘প্রতিশ্রুতি না রাখায়’ আগামী ৩ আগস্ট ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্র এবং দলীয় ইশতেহার পাঠ করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে রবিবার (২৯ জুন) দলের ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণার সময় এনসিপির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম এ কথা জানান।বাংলামোটরে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
নাহিদ ইসলাম জানান, ৫ আগস্ট ‘ছাত্রজনতার মুক্তি দিবস’ পালন করবে এনসিপি। এছাড়া আগামী ১ থেকে ৩০ জুলাই দেশব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক কর্মসূচি পালন করা হবে। জুলাইয়ের প্রথম দিন আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে এ কর্মসূচি শুরু হবে।
কর্মসূচি ঘোষণা করে নাহিদ বলেন, শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে দেশের ৬৪টি জেলায় ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিনি বলেন, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুর মাধ্যমে আন্দোলনে শহীদ হওয়া শুরু হয়। তাই আমরা ১৬ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী শহীদ দিবস’ হিসেবে সারাদেশে পালন করব। এছাড়া ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র এবং ইশতেহার পাঠ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এই দিনকে ‘ছাত্রজনতার মুক্তি দিবস’ পালন করবে জাতীয় নাগরিক পার্টি।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র সরকারের দেওয়ার কথা ছিল। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবির সময় সরকার ৩০ কার্যদিবস সময় দিয়েছিল। সেই ৩০ কার্যদিবস পার হয়ে গেছে। কিন্তু কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। জুলাইয়ের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সাংবিধানিক স্বীকৃতি, শহীদের স্বীকৃতি ইত্যাদি নিশ্চিত করার জন্য আমাদেরই জুলাই ঘোষণাপত্রটি প্রয়োজন। সরকার যেহেতু বলেছিল, সকলে আলোচনা করে ঐক্যমত্যের মাধ্যমে এটি দেবে, প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও সরকার তা রক্ষা করতে পারেনি। সারা বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা এবং তাদের প্রত্যাশা শুনে, তাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার জুলাই ঘোষণাপত্র এবং ইশতেহার পাঠ করব।
জুলাই সনদ ঘোষণা দিতে সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যেহেতু সরকার দায়িত্ব নিয়েছিল, ফলে ব্যর্থতার দায় সরকারকে নিতে হবে। সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে কোথা থেকে বাধা পাচ্ছে। কাদের জন্য এটি হচ্ছে না। সরকার যেহেতু স্পষ্ট করেনি আমাদের মনে হয় সরকারের উপর নির্ভরশীল না থেকে আমাদের জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করা উচিত। পরবর্তী সময়ে সরকারের দায়িত্ব থাকবে এটাকে কীভাবে আইনি প্রক্রিয়ায় রূপান্তর করা যায়। আমাদের অবশ্য দাবি থাকবে এই ঘোষণাপত্র সংবিধানে যুক্ত করার।
তিনি আরও বলেন, আমরা ৩১ ডিসেম্বর এই কর্মসূচি শুরু করেছিলাম। সরকারের জায়গা থেকে যখন বলা হলো, তখন আমরা কর্মসূচি থেকে সরে এসেছি। এখন এই ঘোষণাপত্র রচনার জন্য আমাদের সারাদেশে যাত্রা। আমরা জনগণের দুয়ারে জুলাইকে নিয়ে যাব। তাদের বক্তব্য এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘোষণাপত্র রচিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, এনসিপির কর্মসূচি ও বাস্তবায়ন সেলের সম্পাদক অনিক রায়, যুগ্ম সদস্য সচিব লুৎফর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
ভয়েস/জেইউ।