বৃহস্পতিবার, ০৩ Jul ২০২৫, ১১:২৭ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রামের পটিয়ায় থানার সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জে পুলিশসহ অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রথম দফায় থানার ভেতরে এই ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হন বলে উভয়পক্ষ দাবি করেছেন। পরে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ডিবি পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় ছাত্র আন্দোলনের অন্তত ১১ জন নেতা-কর্মী আহত হয়। তবে এসময় পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১০ টা থেকে ‘পটিয়া ব্লকেড’ কর্মসূচি চলছে।
সূত্র জানায়, দীপঙ্কর দে নামের রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের এক নেতাকে শহীদ মিনারের সামনে থেকে আটক করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা থানায় নিয়ে গিয়ে পুলিশকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তবে তার নামে পটিয়া থানায় কোনো মামলা না থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে অস্বীকৃতি জানায়। পুলিশের ভাষ্য, রাঙামাটিতে কোনো মামলা থাকলে তা যাচাই করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই অবস্থায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডা হয়, যা একপর্যায়ে হাতাহাতি ও সংঘর্ষে রূপ নেয়। এসময় থানার গেট ও অভ্যর্থনা কক্ষের কাচ ভাঙচুর হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরও কর্মীরা থানার সামনে জড়ো হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে ডিবি পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে। এ সময় ছবি তুলতে গেলে কয়েকজন সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয় এবং ছবি ও ভিডিও মুছে ফেলা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত ডিবি সদস্য নিজেকে এসআই তোফায়েল পরিচয় দেন। পরে সাংবাদিকদের ফোন ফেরত দেওয়া হলেও তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা তালহা রহমান অভিযোগ করে বলেন, “আমরা বারবার তথ্য দিয়েও পুলিশকে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখিনি। এবার যখন এক ছাত্রলীগ নেতাকে ধরে থানায় নিয়ে যাই, তখন পুলিশ উল্টো আমাদের ওপরই চড়াও হয়।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক রিদওয়ান সিদ্দিকী বলেন, “জুলাই দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি শেষে থানার মোড়ে অবস্থানকালে দীপংকর নামের ওই ছাত্রলীগ নেতাকে দেখে ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা পুলিশকে গ্রেপ্তার করতে বলে। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার না করে ছাত্রদের উপর লাঠিচার্জ করে। খবর পেয়ে আমিসহ আমাদের বেশকিছু নেতাকর্মী থানার সামনে গেটে গিয়ে অবস্থান নিই। এরমধ্যেই ডিবি পুলিশ এসে বিনা সতর্কতায় আমাদের ব্যাপক লাঠিচার্জ করে।”
আহত ছাত্র আশরাফুল ইসলাম তৌকির বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলাম। পুলিশ আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।”
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর বলেন, “ছাত্রলীগের এক নেতাকে নিয়ে তারা থানায় আসেন। এরপর একদল তাকে ঘিরে “মব” সৃষ্টি করে মারধর করে। এসময় তারা থানার নিরাপত্তা ভেঙে থানায় ঢোকার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। এসময় “মব”ঠেকাতে গিয়ে পুলিশের ৪-৫ জন সদস্য আহত হয়।
ভয়েস/জেইউ।