মঙ্গলবার, ০৮ Jul ২০২৫, ০১:১০ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারে অর্ধশতাধিক গ্রামে জলাবদ্ধতা: দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ

বিশেষ প্রতিবেদক, কক্সবাজার ভয়েস:
সপ্তাহব্যাপী টানা বৃষ্টি ও ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের অর্ধশতাধিক গ্রামে পানি ডুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এসব গ্রামের অধিকাংশ এলাকার বেশকিছু বাড়িঘর বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছে অন্তত লক্ষাধিক মানুষ। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকির আশংকা করছেন আবহাওয়া অফিস।

আজ সোমবার দিনব্যাপী অব্যাহত বর্ষণে কক্সবাজার হোটেল-মোটেল জোনের কলাতলী প্রধান সড়কে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় কক্সবাজার ভ্রমনে আসা পর্যটকরা দুর্ভোগে পড়েছে।

টানা বৃষ্টির কারণে পর্যটন এলাকা ছাড়াও জেলার উখিয়া, টেকনাফ ও চকরিয়াসহ নয় উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামের অধিকাংশ এলাকা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক-উপসড়কে পানি উঠে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। সাগর উত্তাল রয়েছে। পাহাড় ধ্বসের আশংকা করা হচ্ছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানিয়েছেন, আজ সোমবার  সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কক্সবাজারে ১৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সাগর প্রচণ্ড উত্তাল সহ পাহাড় ধ্বসের আশংকা রয়েছে। এজন্য ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসরত মানুষদের নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। ভারী বৃষ্টি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।

এদিকে টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার অন্তত ৫০ গ্রামের প্রায় ৬০ হাজার পরিবারের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে উখিয়া উপজেলার ১০ গ্রাম এবং টেকনাফ উপজেলার ৪০ গ্রাম প্লাবিত হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া উখিয়ার ৩ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টির তথ্য মিলেছে।

টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের দেয়া তথ্য মতে, টেকনাফে ভারী বৃষ্টিপাতে অন্তত ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে কম হলেও ৫০  হাজার পরিবার বন্দি হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ৮টি গ্রাম, হ্নীলা ইউনিয়নে ৭টি গ্রাম, টেকনাফ পৌরসভার ৫টি গ্রাম, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৫টি গ্রাম, সাবরাং ইউনিয়নে ৭টি গ্রাম, বাহারছড়া ইউনিয়নে ৮টি গ্রাম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন , ‘ভারী বর্ষণের ফলে কিছু গ্রামে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। আমরা তাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পাশাপাশি পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরে যেতে বলা হচ্ছে। এজন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

অপরদিকে উখিয়ায় টানা  বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে।  ১০টি গ্রামে জলাবদ্ধতা  সহ সবজি ক্ষেত, বীজ তলা ও পানের বরজ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি  গ্রামীন  রাস্তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

উখিয়া  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন সহ  এলাকায় দ্রুত পানি নিষ্কাশন ও জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নামের তালিকা তৈরি করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের কে বলা হয়েছে।

উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের কুতুপালংয়ের ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন জানিয়েছেন- রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৩ টি ক্যাম্পে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে বেশকিছু রোহিঙ্গা পরিবার।

এদিকে টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া ও রামু উপজেলার ৩০টি গ্রামে জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ৪০ হাজার মানুষ। পানিবন্দী এসব গ্রামের সবজি ও বীজতলার বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION