সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:১৯ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

নেইমার ব্রাজিলে ডাক না পাওয়ার নেপথ্যের কাহিনি

খেলাধুলা ডেস্ক:
৯ সেপ্টেম্বর বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি হবে এমন এক স্টেডিয়ামে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪,১০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। এই উচ্চতার কারণে ব্রাজিল দলের কোচ কার্লো আনচেলত্তি নেইমারকে দলে ডাকেননি—এমনটাই জেনেছে ব্রাজিলীয় গণমাধ্যম ও গ্লোবো।

সাম্প্রতিক দিনগুলোতে নেইমারের যে পেশির অস্বস্তি হয়েছে, সেটিও বিবেচনায় আনা হয়েছে। সেটির সঙ্গে অতিরিক্ত কঠিন পরিবেশ যোগ হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারত। তাই কোচিং স্টাফ তাঁকে বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

আনচেলত্তি বলেন, “নেইমার নেই, কারণ গত সপ্তাহে তার সামান্য সমস্যা হয়েছিল। তবে নেইমারকে আমরা পরীক্ষা করার প্রয়োজন নেই। নেইমারকে সবাই চেনে—কোচিং স্টাফ, সেলেসাও, ব্রাজিলের সমর্থকরা সবাই জানে। অন্যদের মতোই নেইমারেরও ভালো শারীরিক অবস্থায় থাকা জরুরি, যাতে সে জাতীয় দলকে বিশ্বকাপে ভালো কিছু করতে সাহায্য করতে পারে। এই দুটি ম্যাচই বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচ, তাই আমাদের ভালোভাবে শেষ করতে হবে।”

সমুদ্রপৃষ্ঠের তুলনায় উচ্চতায় হাওয়ায় অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকায় খেলোয়াড়রা দ্রুত শ্বাসকষ্ট অনুভব করে এবং ক্লান্তি বেড়ে যায়; এর ফলে দৌড়ানো বা লাফানো কঠিন হয় এবং শারীরিক কর্মক্ষমতা, দ্রুততা ও সহনশীলতা সবই প্রভাবিত হয়।

এই উচ্চতার প্রভাবের কারণে, ২০১৭ সালে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে লিওনেল মেসি ও তাঁর সতীর্থরা অক্সিজেন মাস্ক ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছিলেন। মেসি নিজে এই পরিস্থিতিকে ‘অমানবিক’ বলে অভিহিত করেছিলেন।

নেইমার নিজেও সেই বাছাইপর্বের ম্যাচ বলিভিয়াতে খেলেছিলেন। ম্যাচটি গোলশূন্য ড্র হওয়ার পর নেইমার বলিভিয়ার উচ্চতায় খেলার অভিজ্ঞতাকে “অমানবিক” লে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘এমন অবস্থায় খেলা অমানবিক, মাঠ, উচ্চতা, বল—সবকিছু খারাপ।’

আর এই ডাক না পাওয়ার কারণে ২০২৬ বিশ্বকাপের প্রস্তুতি চক্রে প্রায় এক হাজার দিন সেলেসাও জার্সি গায়ে তুলতে না পারার হতাশাজনক মাইলফলকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। নেইমারের এই দীর্ঘ অনুপস্থিতি তৈরি হয়েছে দুটি বড় সময়কালের যোগফলে।

প্রথম ধাপ: ২০২২ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে বিদায় (৯ ডিসেম্বর ২০২২) থেকে শুরু করে ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ বলিভিয়ার বিপক্ষে ফেরা পর্যন্ত ২৭৩ দিন বাইরে ছিলেন। এ সময়ে হয়েছিল তার ডান গোড়ালির অস্ত্রোপচার এবং আল-হিলালে যোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া।

দ্বিতীয় ধাপ: ১৭ অক্টোবর ২০২৩-এ উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে হাঁটুর লিগামেন্ট ও মেনিসকাস ছিঁড়ে যাওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত মাঠে নামতে পারেননি। যদি তিনি ফেরেন কেবল আগামী অক্টোবর (৬–১৪ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক বিরতিতে, তবে এই সময়টা দাঁড়াবে অন্তত ৭২০ দিন।

এই দুই ধাপ মিলিয়ে নেইমার প্রায় ৯৯৩ থেকে ১০০০ দিন ব্রাজিল দলের বাইরে থাকবেন। বাস্তবে, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে হারের পর থেকে আনচেলত্তির সর্বশেষ ঘোষণা পর্যন্ত প্রায় ৯৯০ দিনের মধ্যে তিনি মাত্র ৩২ দিন সেলেসাওয়ের সঙ্গে কাটাতে পেরেছেন।

আগে বহুবারই চোট বা পরিস্থিতির কারণে ব্রাজিল দলের বাইরে ছিলেন নেইমার, কিন্তু এত দীর্ঘ সময় কখনও নয়। যদি সত্যিই অক্টোবরেই ফেরেন, তবে প্রায় দুই বছর টানা বাইরে থাকার রেকর্ড হবে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অনুপস্থিতি—যা আগের যেকোনো সময়ের দ্বিগুণেরও বেশি।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION