সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৯ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতের সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি বি. আর. গাভাইয়ের দিকে এক প্রবীণ ব্যক্তি জুতা নিক্ষেপ করেছেন। তবে জুতাটি বিচারপতির বেঞ্চ পর্যন্ত পৌঁছায়নি। নিরাপত্তাকর্মীরা সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তিকে আটক করেন। সোমবার সকালে এই ঘটনার পরও নির্বিকার থেকে বিচারপতি গাভাই স্বাভাবিকভাবে শুনানি চালিয়ে যান। পরে এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, এ ধরনের ঘটনায় আমি বিন্দুমাত্র প্রভাবিত হই না। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, দিনের প্রথম মামলার শুনানি শুরু হতেই ওই ব্যক্তি চিৎকার করে বলতে থাকেন, সনাতনের অপমান ভারত বরদাশত করবে না। এরপরই তিনি জুতা নিক্ষেপ করেন। দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে আদালতের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে গ্রেফতার করেন।
জানা গেছে, আটক ব্যক্তির কাছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও সহকারীদের জন্য ইস্যুকৃত একটি প্রক্সিমিটি কার্ড ছিল। কার্ডে নাম লেখা ছিল কিশোর রাকেশ। তার উদ্দেশ্য কী ছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তবে প্রধান বিচারপতি গাভাই রেজিস্ট্রিকে নির্দেশ দিয়েছেন, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিতে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক আইনজীবী জানান, পুরো ঘটনার সময় বিচারপতি গাভাই সম্পূর্ণ শান্ত ছিলেন। তিনি বলেন, আমি এসব ঘটনায় প্রভাবিত হই না। দয়া করে শুনানি চালিয়ে যান।
এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং এক্স প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। ওই আইনজীবীর নাম প্রকাশ করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এটি ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি স্পষ্টভাবে জাতিভিত্তিক আক্রমণ বলে মনে হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের সব বিচারকের উচিত যৌথ বিবৃতির মাধ্যমে এমন হামলার নিন্দা করা। আদালতের মর্যাদা রক্ষার মতোই, সিজেআই গাভাইয়ের শান্তভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া প্রশংসনীয়।
এর আগে, খাজুরাহোর বিষ্ণুমূর্তি সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে দেওয়া মন্তব্যের কারণে প্রধান বিচারপতি গাভাই সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। এক আবেদনের ঘটনায় তিনি বলেছিন, ‘দেবতার কাছেই গিয়ে বলুন। এই মন্তব্য অনেকেই ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হিসেবে দেখেছেন।
পরবর্তীতে প্রধান বিচারপতি ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, তার মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিকৃতভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।’
এ প্রসঙ্গে আদালতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা মন্তব্য করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া এখন নিউটনের সূত্রের চেয়েও তীব্র। প্রত্যেক কাজের প্রতিক্রিয়া এখন সমান নয়, বরং অনেক বেশি।
সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, আমরা প্রতিদিনই এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন এমন এক বুনো ঘোড়া, যাকে বশ মানানো অসম্ভব।
ভয়েস/আআ