বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০:১০ অপরাহ্ন
ভয়েস ডেস্ক:
বাংলাদেশ সরকার দেশের সাইবার স্পেসকে নিরাপদ, নৈতিক ও প্রজন্মবান্ধব রাখার জন্য জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জুয়া, বেটিং ও পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন এবং প্রোমোশনাল কনটেন্টের বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই ধরণের কার্যক্রম দেশের সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২-এর পরিপন্থি।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাইবার স্পেসে জুয়া বা বেটিং সম্পর্কিত কনটেন্ট তৈরি, প্রচার বা বিজ্ঞাপন প্রদর্শন দণ্ডনীয় অপরাধ। একইভাবে, পর্নোগ্রাফি বা অনৈতিক কনটেন্ট প্রচারেও কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
সরকার ও জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (NCSA) বিশেষভাবে চারটি ক্ষেত্রের নির্দেশনা দিয়েছে-
মিডিয়া ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম : দেশের সব পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপন সংস্থাকে কোনোভাবেই জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন প্রচার না করতে বলা হয়েছে। ডিফল্ট অ্যাডসেন্স বা কাস্টমাইজড বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এমন কনটেন্ট দেখানো হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেলিব্রিটি ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর : দেশি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ইনফ্লুয়েন্সার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, তারা কোনোভাবে জুয়া, পর্নোগ্রাফি বা অনৈতিক পণ্য-সেবার প্রোমোশনাল কার্যক্রমে অংশ নেবেন না। এ ধরনের কার্যক্রমে অংশ নেওয়া সাইবার সুরক্ষা আইন অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
দেশি ও বিদেশি ওয়েবসাইট/অ্যাপ : বাংলাদেশে পরিচালিত বা ব্যবহারকারীর জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য কোনো দেশি বা আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত কনটেন্ট, বিজ্ঞাপন বা লিঙ্ক প্রচার করা যাবে না। জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি এসব কনটেন্ট মনিটরিং করবে এবং প্রয়োজনে ব্লকিং, জরিমানা বা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্ম : মোবাইল কোম্পানি, আইএসপি, গুগল অ্যাডসেন্স, মেটা অ্যাডসহ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মগুলোকে স্থানীয় আইন ও নৈতিকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে পপ-আপ ব্লকিং ও ফিল্টারিং নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
সরকার বলেছে, নৈতিক, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে সরকারি সংস্থা, মিডিয়া, প্রযুক্তি কোম্পানি ও নাগরিক সমাজের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য। যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত কনটেন্ট দেখতে পান, তারা notify@ncsa.gov.bd ঠিকানায় তা রিপোর্ট করতে পারবেন।
এতে আরও বলা হয়েছে, শুধু আইনি পদক্ষেপ নয়, সরকারের এই উদ্যোগ তরুণ সমাজের নৈতিক বিকাশ, সামাজিক মূল্যবোধ ও পারিবারিক বন্ধন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাইবার নিরাপত্তা, নৈতিকতা এবং দায়িত্বশীল ডিজিটাল আচরণ নিশ্চিত করতে সিআইডি, বিটিআরসি, এনসিএসএ, এনটিএমসি, এনএসআই ও বিএফআইইউ যৌথভাবে কাজ করছে।
ভয়েস/জেইউ।