শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৩৭ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
প্রশাসনের নিরবতা: কক্সবাজারে মাদক কেনাবেচায় ‘রাখঢাক’ নেই চট্টগ্রাম ইপিজেডে ১৭ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে  বহুল প্রত্যাশিত ঐতিহাসিক জুলাই সনদ স্বাক্ষর আজ, সংসদ এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জেলায় সর্বোচ্চ পাস রামু ক্যান্টনমেন্ট কলেজে, সবচেয়ে পিছিয়ে ঈদগাহ কলেজ টেকনাফে পাহাড়ে দুই গ্রুপের গোলাগুলি, আতঙ্কে গ্রামবাসী অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফি বন্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি, কঠোর নির্দেশনা জারি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া স্বাক্ষর করব না: নাহিদ সবাই ব্যস্ত রেখেছে সরকারকে যেন নির্বাচন না হয়: মির্জা ফখরুল এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় কমেছে পাসের হার, অর্ধেকেরও কমে নেমেছে জিপিএ-৫ মানবতা অপরাধ: হাসিনা-কামালের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছে প্রসিকিউশন

প্রশাসনের নিরবতা: কক্সবাজারে মাদক কেনাবেচায় ‘রাখঢাক’ নেই

এম এ সাত্তার:

বৌদ্ধ মন্দিরসড়ক, গোল দিঘি, কিয়াংপাড়া, বড়বাজার মগপাড়া, মেথরপাট্টি, ৬ নং মগচিতাপাড়া এলাকায় মাদক বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে। থানা পুলিশ, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার অফিসের যোগসাজশেই কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যে চলছে অবৈধ মাদক ব্যবসা। ডিবি পুলিশের একটি অংশও এর সঙ্গে জড়িত বলে জানায় একটি সূত্র।

বৌদ্ধ মন্দির সড়ক গোল দিঘির বিপরীতে একটি গলির ভেতরে ঢুকতেই এক লোক এসে বিনয়ের ভঙ্গিতে জানতে চাইলেন কি প্রয়োজন? তার কথাতে বুঝতে বাকি নেই চোলাই মদ থেকে শুরু করে গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ কোনো কিছুরই অভাব নেই সেখানে। শুধু প্রয়োজন ক্রেতার চাহিদা জানা। গত বুধবার সন্ধ্যার চিত্র এটি। অবৈধ মাদক বিক্রির তালিকায় বড়বাজার মগপাড়া, হাঙ্গরপাড়া, কিয়াংপাড়া, বৌদ্ধ মন্দির সড়ক গোলদীঘি এলাকা, মেথর পাট্রি, ৬নং মগচিতা পাড়ার ছোটখাটো দোকানগুলো মাদক কেনাবেচার অন্যতম প্রাপ্তিস্থান।

১৩ অক্টোবর চাউল বাজার গিয়ে মাদক ব্যবসায়ী-মাদকসেবীদের সঙ্গে পুলিশের সহাবস্থান দেখা গেল। সেখানে চা-সিগারেটের দোকানে কেউ কেউ আড্ডা দিচ্ছেন। কোনো কোনো ঘর থেকে গন্ধ ভেসে আসছে। এক যুবক জানালেন, এসব মদ- ইয়াবার গন্ধ। দিনের বেলায় এক দুইজন করে দেখা গেলেও, সন্ধ্যার পরপরই এই এলাকায় মাদকাসক্তদের হাটে পরিনত হয়। টি-শার্ট ও জিনস পরা দুই তরুণকে বেরিয়ে আসতে দেখা গেল। একই সময় ৪ ব্যক্তিকে একটি ঘরের ভেতরে ঢুকতেও দেখা যায়। স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ভেতরে সব ধরনের মাদক পাওয়া যায়।

কক্সবাজারর মাদক কেনাবেচা বন্ধে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর নিবিড়ভাবে কাজ করছে, এমন দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর। তবে ১৩ অক্টোবর পৌরসভার চাউল বাজারের ভিতরে(আল সালাম মার্কেটের পশ্চিম পাশে) গলি দিয়ে মিনিট দুই হেঁটে যেতে চারটি মাদকের আড্ডা চোখে পড়ে। এর মধ্যে একটি ঘরের একপাশে কমপক্ষে দুটি কক্ষে আয়োজন করে মদের আসর বসাতে দেখা যায়। গলিতে জটলা করে বিক্রি হতেও দেখা যায় মাদক।

বার্মিজ স্কুল রোড হয়ে বৌদ্ধ মন্দির রোডের মুখে এক চা দোকানির সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এখানে মদ,গাজা-ইয়াবা বিক্রি হয়। প্রতিদিন হাজার প্রকারের মানুষ আসে। কয়’টি ঘরে মাদক পাওয়া যায় এমন প্রশ্নের জবাব দেননি, কারো নাম বলেনি তিনি। এইসব বিষয় নিয়ে কোনো প্রশ্ন করতেই কেউ না কেউ সামনে এসে দাঁড়াচ্ছেন তাদের দেখে পিছিয়ে যায় সাক্ষাৎকারকারী। কেননা এলাকাটি সিসি ক্যামেরার আওতাধীন।

এ ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরেই গোপনে সরেজমিনে অনুসন্ধান করেন প্রতিবেদক। দেখা গেছে বিভিন্ন এলাকার মদের দোকানে উপচেপড়া ভীড়। বৌদ্ধ মন্দির সড়কের ওপর একটি দোকান এবং তার পাশের গলির ভিতরে একটি বাড়ির নিচতলায় লৌহার গ্রিল (দরজা বিহীন) এর ভিতর থেকে মদ- গাঁজা বিক্রি চলছে। দুই হিন্দু মহিলা এ দোকান পরিচালনা করেছেন। ওখানে কেউ দাঁড়িয়ে খাচ্ছে কেউ বোতলে করে নিয়ে যাচ্ছেন মদ। অন্যদিকে তিন, চার চাকার গাড়ি রাস্তার দুই পাশে রেখে মদপাট্রিতে ঢুকে পড়েন চালক-প্যাসেঞ্জার। যার কারণে প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ওই রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে।

কক্সবাজার সদরথানার ওসি মোঃ ইলিয়াস খানের দাবি, তিনি মাদকের ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্ট’। তাঁর প্রত্যয় এলাকাকে মাদকমুক্ত করবেন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সিরাজুল মোস্তফা ও উপ-সহকারী পরিচালক সৌমেন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তাদের মুঠোফোনে রিং হলেও রিসিভ না করাই বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কক্সবাজারের মদবিক্রির পরিচিত স্পট বড়বাজার, বৌদ্ধ মন্দির কিয়াংপাড়া এলাকায় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই সব এলাকায় যে যার ইচ্ছামতো মাদক বিক্রি করছেন। তাদের কেউ কিছু বলে না। এতে কোনো রাখঢাক নেই। এলাকাবাসীর অভিযোগ, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার অফিসে কর্মরত কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই মাদক ব্যবসা চলছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশ ও নিরাপত্তা সদস্যদেরও একটি অংশ জড়িত। ফলে বিভিন্ন সময় লেখালেখি হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। মাদকের ব্যবসা চলছে অবাধে।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION