বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৫ অপরাহ্ন
ভযেস নিউজ ডেস্ক:
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে হস্তান্তরের জন্য ভারত সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিচ্ছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন নিশ্চিত করেছেন, দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় চিঠিটি আজ বুধবার দিল্লিতে পাঠানো হবে।
রায়ের পরপরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া বিবৃতিতে স্পষ্ট করা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা ‘অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ’ এবং ‘ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞা’ হিসেবে বিবেচিত হবে।
বিবৃতিতে প্রত্যর্পণ চুক্তির বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হয়, দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা ভারতের জন্য ‘অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব’।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, এই আনুষ্ঠানিক অনুরোধপত্রটি নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে ভারত সরকারকে প্রেরণ করা হবে।
এর আগেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তবে ভারত সেই অনুরোধগুলোতে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। পূর্বের এই অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে, দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে হস্তান্তরে ভারত এবার সাড়া দেবে কি না, তা নিয়ে পর্যবেক্ষক মহলে রয়েছে প্রশ্ন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে একটি দ্বিপাক্ষিক প্রত্যর্পণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল ভারত ও বাংলাদেশ। পরে ২০১৬ সালে চুক্তি সংশোধন করা হয়। এতে দুই দেশের মধ্যে পলাতক বন্দি ও আসামিদের বিনিময় আরও সহজ এবং দ্রুত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, কোনো অপরাধের জন্য কমপক্ষে এক বছরের কারাদণ্ডযোগ্য অপরাধীকে একে-অপরের কাছে প্রত্যর্পণ করার আহ্বান জানাতে পারবে ভারত ও বাংলাদেশ। তবে অপরাধ ‘রাজনৈতিক প্রকৃতি’র হয় বা ফেয়ার ট্রায়ালের অভাব থাকে, তাহলে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা যাবে।
কোন কোন অপরাধের অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক’ বলা যাবে না, সেই তালিকাও বেশ লম্বা-এর মধ্যে হত্যা, গুম, অনিচ্ছাকৃত হত্যা ঘটানো, বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো ও সন্ত্রাসবাদের মতো নানা অপরাধ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসামের (উলফা) শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়াসহ বেশ কয়েকজন পলাতক আসামিকে এই বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে ভারতের কাছে হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ। ভারতও একই ভাবে এই চুক্তির মাধ্যমে পলাতক কয়েকজনকে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছিল।
ভয়েস/আআ