সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

৩ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ শক্তি বলে বিবেচিত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর করোনার ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে। প্রবাসীরা গত এপ্রিলে যে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন তা বিগত ৩৭ মাসের মধ্যে (৩ বছরের বেশি) সবচেয়ে কম। এপ্রিল মাসে প্রবাসীরা ১০৪ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে ২০১৯ সালের এপ্রিলে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ১৪৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। এই হিসেবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সদ্য বিদায়ী এপ্রিলে প্রায় ৪০ কোটি ডলার কম এসেছে। আর গত মার্চ মাসের তুলনায় রেমিট্যান্স কমেছে ২৪ কোটি ডলার। গত মার্চ মাসে প্রবাসীরা ১২৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, প্রবাসী আয় কমলেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। আমদানি ব্যয় না বাড়ার কারণে রবিবার (৩ মে) পর্যন্ত রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩৩.১১ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএস-এর গবেষক ড. জায়েদ বখত মনে করেন, করোনাভাইরাস সারা পৃথিবীর মানুষকে ঘরের মধ্যে আটকিয়ে ফেলেছে। ফলে প্রবাসীদের হাতে কাজ নেই। অনেকে চলেও এসেছে। তবে যারা এখনও বিভিন্ন দেশে রয়ে গেছেন তারাও ঘরবন্দি। তবে আমদানি ব্যয় কমে আসার কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে এই অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত) প্রবাসীরা ১৪ কোটি ৮৫৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গত মার্চ মাস থেকেই প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি নেগেটিভ। যদিও গত ডিসেম্বর মাসে আগের বছরের একই সময়ে প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি ছিল ৩৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অথচ বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে গত দুই মাস ধরে প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধি নেগেটিভ হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, যেসব দেশ থেকে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাতেন, সেসব দেশে এখনও লকডাউন চলছে। অনেক প্রবাসী মারাও গেছেন। যারা বেঁচে আছেন, তাদের হাতে কাজ নেই। সামনের দিনগুলো নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রবাসীদের অনেকেই দেশে চলেও এসেছেন। আর যারা ওইসব দেশে আটকা পড়েছে, তাদের আয় কমে গেছে। যে কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহে ধস নেমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন ৯৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। এরপর তিন বছরে অর্থাৎ ৩৭ মাসে এতো কম রেমিট্যান্স আসেনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসেবে গত ডিসেম্বরে প্রবাসী আয় এসেছে ১৬৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার। জানুয়ারিতে এসেছে ১৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারিতে এসেছে ১৪৫ কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রসঙ্গত, বিদায়ী বছরজুড়ে প্রবাসী আয়ে বড় উল্লম্ফন ঘটে। ২০১৯ সালের পুরো সময়ে (১২ মাসে) প্রবাসীরা ১ হাজার ৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলারের আয় পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা। আর ২০১৮ সালে এসেছিল ১ হাজার ৫৫৩ কোটি ডলার। প্রবাসী আয়ে ২ শতাংশ প্রণোদনা, ডিজিটাল হুন্ডি বন্ধের উদ্যোগ ও ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান কমায় বৈধ পথে আয় আসা বাড়লেও করোনার কারণে হঠাৎ ছন্দপতন দেখা দিয়েছে।

করোনার বৈশ্বিক মহামারি রূপ নেওয়ার পর অনেক প্রবাসী দেশে ফিরে এসেছেন। জানুয়ারি থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত ফিরে এসেছেন ৬ লাখ ৬৬ হাজার ৫৩০ জন প্রবাসী। বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস দিয়েছে করোনা মহামারীর কারণে এ বছর বাংলাদেশে রেমিট্যান্স কমবে ২২ শতাংশ। সূত্র:বাংলাট্রিবিউন।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION