শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩০ অপরাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক:
সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে সাগর উপকূল থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া আরো ৫ ফিশিং ট্রলার ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমার নৌবাহিনী। বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে মাঝিমাল্লা সহ এসব ট্রলার মিয়ানমার নৌবাহিনী ছেড়ে দিলে কোস্ট গার্ডের টহল জাহাজ ট্রলার গুলো সেন্টমার্টিন্স দ্বীপের কাছে নিয়ে আসে। আগামীকাল শুক্রবার সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জেটি ঘাটে মাঝিমাল্লা সহ ট্রলার সমুহ নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছে টেকনাফ কোস্ট গার্ড। উক্ত ট্রলার সমুহে ৪৭ জন মাঝিমাল্লা ও জেলে রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে জানানো হবে বলে কোস্ট গার্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এর আগে ধরে নিয়ে যাওয়া একটি ফিশিং ট্রলার ছেড়ে দিয়েছিল মিয়ানমার নৌবাহিনী। ট্রলারটি বৃহস্পতিবার দুপুরে ১১ জন মাঝিমাল্লা জেলে সহ শাহপরীর দ্বীপের জেটি ঘাটে এসে পৌঁছে। এর মধ্যে মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে নিহত এক জেলের মরদেহ এবং গুলিবিদ্ধ দুই জন জেলে রয়েছে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জেলে মো. ওসমান গনি শাহপরীরদ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীরদ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকাধিন ট্রলারের জেলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ২ জেলেও ওই ট্রলারের।
ধরে নিয়ে যাওয়া অপর ৫ টি ট্রলার সমুহের মালিক হলেন, শাহপরীরদ্বীপের মিস্ত্রীপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমানের ২ টি, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহ, তাঁর ভাই আতা উল্লাহ, উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেম।
ট্রলার মালিক মতিউর রহমান জানান, প্রথমে নিহত জেলে সহ সাইফুলের মালিকাধিন ট্রলারটি শাহপরীরদ্বীপ জেটি আসে দুপুর আড়াই টায়। বিকেলে অপর ৫ টি ট্রলার সহ জেলেরা সেন্টমার্টিনে এসেছে। ওখানে জেলেদের সাথে আলাপ করে কোস্টগার্ড ও বাংলাদেশের নৌ বাহিনী তথ্য সংগ্রহ করছে। সেন্টমার্টিন থেকে ওই ট্রলারও শাহপরীরদ্বীপ ঘাটে আনা হবে।
ট্রলার মালিক সাইফুল জানিয়েছেন, সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ করে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে গুলি বর্ষণ করে। এরপর ৬ টি ট্রলার সহ মাঝি-মাল্লাদের ধরে মিয়ানমারে নিয়ে যায়। যেখানে তার মালিকাধিন ট্রলারে গুলিবিদ্ধ ৩ জনের মধ্যে একজন মারা যায়। বৃহস্পতিবার সকালে ওই ট্রলারটি ছেড়ে দিয়েছে।
কোস্টগার্ডের শাহপরীরদ্বীপের দায়িত্বরত কর্মকর্তা (নাম প্রকাশ না করে) বিষয়টি স্বীকার করে জানান, মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর সাথে আলোচনার পর বৃহস্পতিবার সকালে একটি বিকেলে ৫টি ট্রলার ছেড়ে দিয়েছে। ৫টি ট্রলার ও মাঝিমাল্লা ও জেলেকে আগামীকাল শুক্রবার সকালে শাহপরীর দ্বীপের জেটিতে নিয়ে আসা হবে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, বুধবার দুপুর আড়াই টায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও মিয়ানমার মধ্যবর্তী বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের মাছ ধরার নৌকায় মিয়ানমারের নৌবাহিনী গুলি করে এবং ৬টি বোট জেলেসহ আটক করে যায়। গুলির ঘটনায় ১ জন নিহত হয়েছেন এবং দুজন আহত হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে জেলেদের পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি জানান। পরে মিয়ানমার নৌবাহিনী বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের নিকট ১ টি ট্রলার সহ জেলেদের হস্তান্তর করে। বৃহস্পতিবার আড়াইটার দিকে নিহত জেলের মরদেহ ও ১১ জন জেলে নিয়ে একটি ট্রলার শাহপরীরদ্বীপ জেটিতে ফিরেছে।
ভয়েস/আআ