বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৮:০৪ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

উত্তম আচরণ কল্যাণ বয়ে আনে

সালেহ আহমাদ :
মানুষ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। তার আচার-আচরণ, কথাবার্তা, চলাফেরা, লেনদেন সবই শ্রেষ্ঠত্বের দাবি করে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র তথা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মুসলিম জনগোষ্ঠীর আচার-ব্যবহার কথা-বার্তার মৌলিক দিক হবে মহান আল্লাহ ও তার রাসুলের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী। মানুষের জীবনে ঘটবে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসরণ ও অনুকরণীয় আদর্শের প্রতিফলন। মহান আল্লাহ নবী মুহাম্মদ (সা.) কে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজেও বলেছেন, ‘তিনি প্রেরিত হয়েছেন উত্তম চরিত্রের পরিপূর্ণতা বিধানের জন্য।’

চলার পথে, ব্যক্তি-সমাজ পরিচালনার সর্বক্ষেত্রে আমাদের আচার-আচরণ হতে হবে উত্তম ও আদর্শনীয়। কাউকে গালি দিয়ে নয়, ভালো ও উত্তম ব্যবহার দিয়ে তার সঙ্গে কথা বলব, তাকে আলিঙ্গন করব, সালাম দিয়ে তার কল্যাণ কামনা করে অভ্যর্থনা জানাব। আল্লাহতায়ালা নবী মুহাম্মদ (সা.) কে চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়া, ওঠাবসাসহ সর্বক্ষেত্রে উত্তম আচরণের স্বাক্ষর রাখতে বলেছেন। এই নির্দেশনা হবে আদর্শ।

আমরা জানি, স্বামী-স্ত্রীর উত্তম ব্যবহার, আচার-আচরণের ওপর তাদের ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ গঠনে বড় ভূমিকা রাখে। তাদের সত্যবাদিতা, নামাজ-কালাম, পোশাক-পরিচ্ছদ, ঘরের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে তাদের ব্যবহার ছেলেমেয়েরা অনুসরণ-অনুকরণ করে। আমরা ঘরের কাজের লোকদের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলি নাকি তাদের সবসময় রাগের স্বরে কথা বলি, তাও কিন্তু ছেলেমেয়েরা অবলোকন করে। আমরা কি কাজের লোকদের বা অধস্তন লোকদের খাওয়া-দাওয়া, পোশাক-পরিচ্ছদ, মাস শেষে তাদের পারিশ্রমিক ঠিকমতো দিই কি না, তাও অনুসরণীয়।

নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সেবায় হজরত আনাস (রা.) দীর্ঘ ১০ বছর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বলেছেন, নবী কারিম (সা.) তার কাজের সময় সহযোগিতা করেছেন এবং ভুল ধরার মানসিকতা নিয়ে চলেননি। এমনকি হজরত আনাস (রা.) বলেছেন, ‘নবী কারিম (সা.) কোনোদিন বলেননি- তুমি এ কাজ কেন করেছ বা কেন করনি।’ বর্ণিত হাদিস আমাদের অধীনে ঝাড়ুদার, পিয়ন, দারোয়ান, ড্রাইভারদের সঙ্গে ব্যবহার হতে হবে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসরণীয়-অনুকরণীয়। আমরা কোনো ভাইয়ের উত্তম চরিত্র সম্পর্কে জানার থাকলে, তাদের নিম্নে কর্মচারীদের কাছ থেকেই খোঁজ নিয়ে বুঝতে পারব।

যারা সমাজের, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার, তাদের উত্তম আচার-আচরণের অধিকারী হতে হবে। কোনো সময় নেতিবাচক কাজ করা যাবে না, সবসময় ইতিবাচক কাজ করার চেষ্টা করতে হবে। সব সময় ভালোকে প্রাধান্য দিয়ে মন্দকে দূরে রাখতে হবে। আমাদের কথা ও কাজের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকবে না। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমরা এমন কথা বলবে না, যা তোমরা করো না। তোমরা যা করো না, তা বলা আল্লাহর কাছে বড়ই ক্রোধের বিষয়।’ সুরা সফ : ৩

ইসলামের শিক্ষা হলো সর্বদা কথা ও কাজের মিল থাকতে হবে। কোনোভাবেই এর বরখেলাপ করা যাবে না। মুখে এক কথা আর অন্তরে অন্য চিন্তা খুবই নিন্দনীয় এবং ঘৃণাযোগ্য কাজ। মহান আল্লাহ সবকিছু দেখেন এবং সবকিছু জানেন। তাকে ফাঁকি দেওয়া মোটেও সম্ভব নয়। ধরা পড়তেই হবে। কোরআন মাজিদের সুরা জিলজালের শেষ দুই আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে, ‘(আমাদের) প্রত্যেকের অণু পরিমাণ ভালো কাজের হিসাব তার (আল্লাহর) কাছে সংরক্ষিত থাকবে এবং অণু পরিমাণ মন্দ কাজেরও হিসাব তার কাছে থাকবে।’

কোরআন মাজিদের এই বাণীর কথা স্মরণ করে চলার পথে, আচার-আচরণে প্রত্যক্ষ স্বাক্ষর রাখতে হবে। কোনো ভয়ভীতি, লোভ-লালসার কাছে পরাজিত হওয়া যাবে না। যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করি, তাদের মধ্যে আচার-আচরণে বড় ভূমিকা রাখতে হবে। কোনোভাবেই কারও কথায় বা কাজে উত্তপ্ত হওয়া যাবে না। কাউকে খামাখা উত্ত্যক্ত করা যাবে না। কাউকে ছোট করে কথা বলা যাবে না। কাউকে খোঁটা দিয়ে কথা বলা যাবে না।

সর্বাবস্থায় উত্তম আচরণে ভালো ফল পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা যাবে না। অবশ্যই উত্তম কাজের ফল মহান আল্লাহ দুনিয়াতেও দেবেন, আর আখেরাতে তো নিয়ামত ভরা জান্নাত অপেক্ষা করছে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION