বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:১৪ পূর্বাহ্ন
তাহমিনা আক্তার:
জীবন একটি নির্দিষ্ট সময়ের সমষ্টি। প্রতিনিয়ত আমাদের হায়াতের দিনগুলো ফুরিয়ে যাচ্ছে। আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলছি আর অন্তিম সেই জীবনের নিকটবর্তী হচ্ছি। অথচ আমরা কত উদাসীন। আমরা দুনিয়ার মোহে বিভিন্ন বস্তুর পেছনে নিরন্তর ছুটে চলি। আমরা ভুলে যাই, আমাদের নির্দিষ্ট গন্তব্যের কথা। আমরা কখনো কি ভাবি প্রতিনিয়ত যে পথের দিকে নিরন্তর ছুটে চলছি, সেই পথের গন্তব্য কোথায়? পৃথিবীর রঙ-রসে মেতে মৃত্যুকে হয়তো ভুলে থাকা যায়, কিন্তু মৃত্যুকে এড়ানো বা মৃত্যু থেকে পালিয়ে বাঁচা যায় না। অথচ আমাদের সোনালি প্রজন্মের মানুষগুলো মৃত্যুকেই জীবনের লক্ষ্য বানাতেন। মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেওয়াই ছিল জীবনের মূল উদ্দেশ্য। আমরা দুনিয়ার সবকিছুর জন্যই প্রস্তুতি নিই। চাকরি, বিয়ে, ক্যারিয়ার, এমনকি নিত্যদিনের বাজার-সদাই করার জন্যও আমাদের একটা প্রস্তুতি থাকে। কিন্তু প্রস্তুতি নেই কেবল মৃত্যুর জন্য! আজ সন্ধ্যায় বেঁচে আছি, পরের দিনটা দেখতে পারব কি না সেটার কোনো নিশ্চয়তা নেই। এ ব্যাপারে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেছেন, ‘যখন সন্ধ্যা উপনীত হয় তখন সকালের জন্য অপেক্ষা করো না। আর সকাল উপনীত হলে সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষায় থেকো না। তোমার সুস্থতা থেকে কিছু সময় তোমার অসুস্থতার জন্য বরাদ্দ রাখো এবং সময় থাকতে মৃত্যুর জন্য পাথেয় সংগ্রহ করে নাও।’ (সহিহ বুখারি)
বাড়ি-গাড়ি, সন্তানসন্ততি, আত্মীয়স্বজন, ভক্তকুল সবাইকে রেখে, সবকিছু ছেড়ে কেবল এক টুকরো কাফনের কাপড় সঙ্গে নিয়ে কবরে প্রবেশ করতে হবে। বিলাসিতায় কাটানো সুন্দর দেহটা পোকার খোরাক হবে। জীবনের সব আশা ও আকাক্সক্ষা মুহূর্তের মধ্যে বিলীন হয়ে যাবে। মুমিন মৃত্যু আসার আগেই প্রস্তুতি গ্রহণ করে এবং মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করে। মৃত্যুর স্মরণ মানুষকে অনেক অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে এবং পরকালের পাথেয় অর্জনের সহায়ক হয়।
ভয়েস/আআ