বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:০৮ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
খালেদা জিয়াকে চৌদ্দগ্রামে নাশকতা মামলা থেকে অব্যাহতি ১৮ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে নিচ্ছে ভারত বাংলাদেশ ও ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একসাথে কাজ করবে ফলাফল জালিয়াতি:চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব নারায়ন চন্দ্র নাথসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা টেকনাফে পাচারকারীর ফেলে যাওয়া বস্তায় পাওয়া গেল সাড়ে ৪ লাখ পিস ইয়াবা পেকুয়ায় হরিণাফাঁড়ী এলাকায় টপসয়েল কাটা বন্ধে অভিযানে হামলাচেষ্টা ফারিনের ‘ঠিকানা’ ১০ মিলিয়নে বিশ্বকাপের দৌড়ে উইন্ডিজকে হারিয়ে টিকে থাকল বাংলাদেশ বাণিজ্যকে আমরা রাজনীতির সাথে মিলাচ্ছি না:খাদ্য উপদেষ্টা বেড়েছে চোরের উপদ্রব, আতঙ্কে দিন কাটে মানুষের

উত্তম চরিত্রের বিনিময়ে জান্নাত

মো. আবদুর রহমান:
চরিত্র মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ। মানুষের আচার-আচরণ, চিন্তা-চেতনা ও দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্য দিয়ে যে উত্তম স্বভাব ও বৈশিষ্ট্য প্রকাশিত হয় তাই উত্তম চরিত্র। একজন আদর্শ মানুষকে অবশ্যই উত্তম চরিত্রের অধিকারী হতে হবে। কোরআন ও হাদিসে চরিত্র গঠনের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কারও সন্তান জন্মগ্রহণ করলে সে যেন একটা সুন্দর নাম রাখে এবং উত্তমরূপে তাকে আদব-কায়দা ও শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়।’ (বায়হাকি)

উত্তম চরিত্র হলো পুণ্য। তাই মুমিন একজন পুণ্যবান। সমাজের চোখে এক আদর্শ দৃষ্টান্ত। তার মধ্যে যাবতীয় মানবীয় গুণাবলির বিকাশ ঘটে বলে চরিত্রবান মানুষ জাতির সম্পদ। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে মৌলিক পার্থক্য এ চরিত্রের আলোকেই হয়ে থাকে। এটি নষ্ট হয়ে গেলে ব্যক্তির আত্মমর্যাদা ও সম্মান কিছুই থাকে না। চরিত্রের চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই নেই। টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত কিংবা স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে গেলে তা আবার ফিরে পাওয়া যায়। কিন্তু চরিত্রে একবার কলঙ্ক লাগলে তা আর দূর করা যায় না। এ জন্য রাসুল (সা.) সব সময় বলতেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই উত্তম, যার চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর এবং যে অন্যদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে।’ (সহিহ বুখারি) উত্তম চরিত্রের মতো কোনো মহৎ গুণ পৃথিবীতে নেই। যিনি সচ্চরিত্রের অধিকারী তিনি সমাজের শ্রেষ্ঠ অলঙ্কার ও প্রজ্বলিত দীপশিখা। এ জন্যই চরিত্রকে জীবনের মুকুট বলা হয়। সদাচারের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হলো, মানুষের হিংসা-বিদ্বেষ ও গর্ব অহংকারের মনোভাব। মানব চরিত্রে যেসব খারাপ দিক আছে, তার মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ মারাত্মক ক্ষতিকর। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজে পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ, ঈর্ষাকাতরতা, কলহ-বিবাদ প্রভৃতি মানুষের শান্তিপূর্ণ জীবনকে অত্যন্ত বিষাদময় করে তোলে। এতে মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও জাতীয় জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। সদাচারের নির্দেশ দিয়ে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তোমার প্রতি আল্লাহ যেমন অনুগ্রহ করেছেন তেমনি তুমিও লোকদের প্রতি সেরূপ অনুগ্রহ করো। আর জমিনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়ো না। আল্লাহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের পছন্দ করেন না।’ (সুরা কাসাস ৭৭) রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘অশ্লীল কথা ও আচরণের সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। আর যার চরিত্র যত উত্তম তার ইসলাম ততই সুন্দর।’ (মুসনাদে আহমাদ)

আখেরাতের কল্যাণ লাভও উত্তম চরিত্রের ওপর নির্ভর করে। এর মাধ্যমে পরম পুণ্য অর্জন করা যায়। উত্তম চরিত্র হলো পরকালে মুক্তির উপায়। ইসলামের অপরিহার্য ফরজ তথা নামাজ, রোজা, জাকাত ও হজ পালন করা সত্ত্বেও পরকালে জাহান্নাম থেকে নাজাত ও জান্নাত লাভের জন্য উত্তম চরিত্রের কোনো বিকল্প নেই। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, দুটি বস্তু মানুষকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। তা হলো, আল্লাহর ভয় এবং উত্তম চরিত্র।’ (তিরমিজি) আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, একজন মুমিন ব্যক্তি তার উত্তম চরিত্রের মাধ্যমে নিয়মিত দিনের বেলায় রোজা পালনকারী এবং রাত জেগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়কারীর সমান মর্যাদা লাভ করতে পারে।’ (আবু দাউদ) তাই পরকাল বিশ্বাসী মানুষের প্রধানতম দায়িত্ব হলো উত্তম চরিত্রে চরিত্রবান হওয়া এবং মন্দ ও অসদাচরণ হতে নিজেকে রক্ষ করা। আবু জর গিফারি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, তুমি যেখানেই থাকো আল্লাহতায়ালাকে ভয় করো এবং কোনো গুনাহ করে ফেললে সঙ্গে সঙ্গে নেক কাজ করো, যা তোমার গুনাহকে মুছে দেবে। আর মানুষের সঙ্গে উত্তম আচরণ করো।’ (তিরমিজি)

কেয়ামতের দিন মানুষের সওয়াব ও গুনাহ পরিমাপের জন্য মিজানে ওজন করা হবে। সেদিন যে আমলের ওজন সবচেয়ে বেশি ভারী হবে তা হলো উত্তম চরিত্র। এ সম্পর্কে আবু দারদা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, কেয়ামতের দিন মিজানের পাল্লায় মুমিনের উত্তম চরিত্রের চেয়ে ভারী আর কোনো আমল হবে না। (আবু দাউদ) আমলের পাল্লাকে ভারী করার সহজ পথ হলো, চরিত্রকে সুন্দর করা। তাই সুন্দর চরিত্র অর্জনের মাধ্যমে কেয়ামতের দিন আমলের পাল্লা ভারী করা প্রত্যেক নারী-পুরুষের জন্য জরুরি। রাসুল (সা.) সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও মহান আল্লাহর কাছে তার সুন্দর চরিত্র গঠনের জন্য দোয়া করতেন। এ সম্পর্কে আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) এই দোয়া করতেন, হে আল্লাহ! আপনি আমার চরিত্রকে সুন্দর করুন যেমনভাবে আমার শারীরিক গঠনকে সুন্দর করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ) মহান আমাদের উত্তম চরিত্র গঠনের তওফিক দান করুন। আমিন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION