বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:২৭ পূর্বাহ্ন
আবদুল আজিজ:
নির্বাচনের আগে সংস্থার প্রয়োজন। এতে করে জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। বর্তমানে দেশ পরিচালনার সমস্ত ক্ষেত্রেই দুর্নীতির জালে আবদ্ধ। মন্ত্রণালয়, পুলিশ, প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদি খাতসমূহের দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন। যে সংস্কার হবে একান্তই নাগরিক বান্ধব। একইভাবে কক্সবাজারের ট্যুরিজম ক্ষেত্রেই সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।
বৈষম্যহীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে নাগরিক সমাজের সম্মিলন ‘সংস্কার, জাতীয় ঐক্য ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হয় কক্সবাজারে। এতে বক্তরা নির্বাচনের আগে দেশ সংস্কারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। বক্তরা বলেছেন- জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই, সংস্কারের বিকল্প নেই। কারণ, কোন দলীয় সরকারের অধীনে কোন ধরণের সংস্কার প্রয়োজন নেই। মন্ত্রণালয়, পুলিশ, প্রশাসন, বিচার ব্যবস্থা, ব্যাংকিং ব্যবস্থা, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদি খাতসমূহের দ্রুত সংস্কারের পাশাপাশি পর্যটন উন্নয়নে সংস্কার প্রয়োজন রয়েছে। সারাদেশের সাথে কক্সবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন করতে হবে। ব্রান্ডিং করতে হবে কক্সবাজারকে।
রবিবার বিকালে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরি শহীদ সুভাষ হল মিলনায়তনে কক্সবাজার সিভিল সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত উক্ত নাগরিক সংলাপে এসব কথা বলেন।
কক্সবাজার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সাহেদুল ওয়াহিদ প্রশ্ন রেখে বলেন- ‘বিভিন্ন সেক্টরে ফ্যাসিষ্ট ও দোসরদের রাখা হয়েছে কেন? দেশের আইনি প্রক্রিয়া সংস্কার করতে হবে। উদাহরণ কোন মিডিয়া হাউস কোন সরকারি অফিসের বিরুদ্ধে তদন্ত করা যাবে না। তাই, সর্ব প্রথম আইনি সংস্কার দরকার। সুপ্রিম জুডিসিয়াল সংস্কার প্রয়োজন।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক জিনিয়া বলেন-‘ আজ ৫/৬ মাস অতিবাহিত হচ্ছে। অথচ ২৪ আন্দোলনে ২ হাজার শহীদদের কোন খবর নেই। অথচ আমরা সবাই নির্বাচনমুখী হয়ে যাচ্ছি। একারণে সংস্কারের মধ্যে নির্বাচনকেও আনা দরকার।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক তাসিম বলেন-‘নির্বাচনের আগে সংস্কার প্রয়োজন। বিশেষ করে কক্সবাজার ট্যুরিজমের সংস্কার দরকার। ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করতে হবে। এতে করে বিনিয়োগকারি দ্রুত পর্যটনে বিনিয়োগ করতে পারবে।’
কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট রমিজ আহমদ বলেন-‘ বাংলাদের সিংহ ভাগ টাকা এস আলম গ্রুপ বিদেশে নিয়ে গেছে। অথচ এস আলমের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলায় স্থাগিত করার জন্য বলা হয়। একারণে বিচার বিভাগে সংস্কার না হলে কোন বিচারক নিরপেক্ষ থাকবে না।’
কক্সবাজার সিটি কলেজের অধ্যাপক মঈনুল হাসান পলাশ বলেন-‘পর্যটন উন্নয়নে সংস্কার খুব জরুরী। বিশেষ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন করতে হবে। কক্সবাজার পর্যটন নিয়ে ব্রান্ডিং করতে হবে।’
সাবেক জেলা শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নাগরিক সংলাপে তিনি বলেন- প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে সংস্কারের পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যে রাজনৈতিক সংস্কারের কোন বিকল্প নেই।’
কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন-‘ ছাত্র আন্দোলনের পর দেশের রাজনীতি নিয়ে বিভিন্নভাবে কথা উঠে এসেছে। তাই, কক্সবাজারবাসী কি ভাবছে। এনিয়ে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। আমরা মনে করি কক্সবাজারে নাগরিক সংলাপের বার্তাটি অন্তর্বর্তী সরকারের নীতি-নির্ধারনী মহরে পৌছে দিতে এই উদ্যোগ।’
কক্সবাজার জেলার সাবেক মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- এডভোকেট রমিজ আহমদ, সাংবাদিক ইউনিয়ন কক্সবাজারের সভাপতি জিএম আশেক উল্লাহ, এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর কাসেম, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জাহেদুল ইসলাম, কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম, অধ্যাপত মঈনুল হাসান পলাশ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক জিনিয়া, সাগর, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এডভোকেট মো: ইউনুচ, জেলা ছাত্রদল নেতা মিজানুল আলম সহ অনেকে। এ সময় তিন শতাধিক সমাজের সচেতন নাগরিক ও অংশীজন উপস্থিত ছিলেন। সংলাপে বক্তারা রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য বিভিন্ন মতামত তুলে ধরেন। এ ছাড়া দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে সবাইকে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তারা।
ভয়েস/আআ