রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ১০:১৫ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

এক নারীকে বিয়ে করে দুই ভাই বললেন ‘আমরা সন্তুষ্ট’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

ভারতের হিমাচল প্রদেশের শিলাই গ্রামে হাট্টি উপজাতির দুই ভাই এক নারীকে বিয়ে করেছেন। এরপরেই তাদের বিয়ের খবর দেশি-বিদেশি মিডিয়ার সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়। চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। বিশেষ করে আলোচনায় এসেছে হাটি সম্প্রদায়।

শতাব্দী প্রাচীন বহুপতিত্ব বিবাহ রীতিতে বিয়ে করার পর দুই ভাই জানিয়েছেন তারা এই বিয়ে করে সুখে আছেন। ‘হাটি’ সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য রক্ষা করতে পেরে তারা যে গর্বিত হয়েছেন, তাও জানিয়েছেন।

কুনহাট গ্রামের বাসিন্দা সুনীতা চৌহান জানিয়েছেন, হাটি সম্প্রদায়ের বহুবিবাহ প্রথার ঐতিহ্য সম্পর্কে তিনি সচেতন ছিলেন। এবং কোনো ধরণের চাপ ছাড়াই তিনি দুই ভাইকে বিয়ে করার ‍সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সুনীতা এমন বিবাহ প্রথাকে সম্মান করেন বলেও জানিয়েছেন।

ফেসবুকে প্রকাশিত এক ভিডিওতে প্রদীপ নেগি বলেন, ‘‘এই বিবাহ প্রথা বহু প্রজন্ম ধরে চলে আসছে। হাটি সম্প্রদায়ের মধ্যে এই প্রথা চলতেই থাকবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু মানুষ গালি দিচ্ছে, তাতে আমার কিছু আসে যায় না। এই প্রথা শুধু আমাদের এলাকায় নয়, উত্তরাখণ্ডের জৌনসার-বাওয়ার অঞ্চলেও প্রচলিত। ওখানে একই নারীর সঙ্গে দুই বর মালা বদল করে বিবাহ সম্পন্ন করেন।’’

প্রদীপের ভাই কপিল নেগি জানান, ‘‘তাদের এই বিবাহ সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় হয়েছে। এতে পরিবারের পক্ষ থেকেও পূর্ণ সমর্থন ছিল। আমরা আমাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পক্ষে কথা বলে যাবো। যারা আমাদের রীতি জানেন না, তারাও বিভিন্ন মতামত দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা, আমাদের পরিবার ও সমাজ এতে সন্তুষ্ট।’’

প্রদীপ আরও বলেন, ‘‘আমাদের খ্যাতির কোনো লোভ নেই। সংবাদ শিরোনামে আসার জন্য আমরা বিয়ে করিনি। এই বিয়ের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো একসঙ্গে থাকা এবং ভালোবাসা বজায় রাখা। মানুষকে বলছি, আমাদের সমালোচনা করবেন না—আমরা আমাদের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট।’’

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শিল্লাই গ্রামের ট্রান্স-গিরি অঞ্চলে ১২ জুলাই শুরু হয়। তিন দিনব্যাপী চলে অনুষ্ঠান। নাচ, স্থানীয় লোকগীতি এবং গ্রামীণ উৎসবের রঙিন আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

এই বিয়ের উদ্দেশ্য হলো পূর্বপুরুষদের জমি খণ্ডিত হতে না দেওয়া। জমি খণ্ডিত হয়ে যাওয়া পাহাড়ি কৃষি সম্প্রদায়ের জন্য একটি বড় সমস্যা। এ ধরনের বিবাহে সাধারণত বড় ভাইকেই সন্তানদের আইনি পিতা হিসেবে গণ্য করা হয়। এবং জমির মালিকানাও একই মায়ের সন্তানদের কাছে থেকে যায়।

উল্লেখ্য, হিমাচল প্রদেশে, ‘ওয়াজিব-উল-আরজ’ নামে ঔপনিবেশিক যুগের এক রাজস্ব নথিতে ‘জোড়িদারা’ ব্যবস্থা লিপিবদ্ধ রয়েছে। ওই দলিলে গ্রামের সামাজিক ও অর্থনৈতিক রীতিনীতি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং বহুপতিত্ব বিবাহ প্রথাকে হাটি সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতিও দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: এনডিটিভি ও বিবিসি/ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION