শনিবার, ২৮ Jun ২০২৫, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

হৃদয়ের আকাশে কাবার ছবি

পবিত্র কাবা, ফাইল ছবি

ইউসুফ কবির:
পবিত্র কাবা দেখার তীব্র আকাঙ্ক্ষা প্রতিটি মুসলমানেরই রয়েছে। আমিও ছোটবেলা থেকে হজ পালন এবং কাবাঘর দেখার সুপ্ত বাসনা নিয়ে বড় হয়েছি। কত বিনিদ্র রজনী এ হৃদয়ের আকাশে কাবার ছবি এঁকেছি, সেটার কোনো হিসাব নেই। হজ পালনের কী যে সুতীব্র স্পৃহা এ বুকে পোষণ করে বড় হয়েছি, সেটা বর্ণনাতীত। কাবার জন্য কী যে হাহাকার, কী যে ব্যাকুলতা ছিল হৃদয়ের মণিকোঠায়, অন্তর জুড়ে, তা কেবল অন্তর্যামী জানেন।

আমার এই ছোট্ট জীবনে এমন কোনো নামাজ, দোয়া ও ইবাদত নেই যেখানে আমি কান্নারত অবস্থায় মহান আল্লাহর কাছে পবিত্র হজ পালনের জন্য সাহায্য চাইনি। আমার প্রতিটি মোনাজাতে কান্নারত অবস্থায় মহান আল্লাহর কাছে বলেছি, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে হজ না করিয়ে মৃত্যু দিয়ো না।’ আমার জীবনের সবচেয়ে বড় চাওয়া ছিল পবিত্র হজ পালন করা। তিনি আমার সেই প্রত্যাশা পূরণ করেছেন।

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সাল। রূপায়ণ গ্রুপের প্রধান কার্যালয় থেকে বিকেল ৪টায় মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মাহফুজ স্যার ফোন করে জানতে চাইলেন পাসপোর্ট রিনিউ করা আছে কি না? করা থাকলে একটি কপি যেন তাকে এখনই পাঠিয়ে দিই। স্যারের কথামতো কোনো কিছু জানতে না চেয়ে কপি পাঠিয়ে দিই। তারপর কেটে যায় প্রায় এক মাসের অধিক সময়।

১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার অফিস শেষে বাইক চালিয়ে বাসায় ফিরছি। ফোন করেন মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান মাহফুজ স্যার। জিজ্ঞেস করলেন কোথায় আছি। বললাম বাসায় যাচ্ছি। তিনি বলেলেন, বাইক সাইড করে কথা শোনেন। চুপ করে দাঁড়ালাম। ফোনের ওপাশ থেকে তিনি বললেন, ‘এ বছর রূপায়ণ গ্রুপ থেকে হজে যাওয়ার জন্য আপনার নাম মাননীয় চেয়ারম্যান মহোদয় অনুমোদন প্রদান করেছেন।’ কথাটা শোনামাত্র আমি রাস্তায় বসে পড়ি! আমার চোখ দিয়ে অনবরত আনন্দের অশ্রু ঝরতে শুরু করে। তাকে ধন্যবাদ জানাই।

বাইক চালিয়ে মায়ের কাছে যাই, চোখে অনবরত অশ্রু ঝরছে। মা আমাকে দেখে রীতিমতো ভয় পেয়ে যান। মা বলেন, কী হয়েছে? আমি বললাম, মা! এ বছর রূপায়ণ গ্রুপ থেকে হজে যাওয়ার জন্য আমার নাম মাননীয় চেয়ারম্যান মহোদয় অনুমোদন করেছেন! আমি পবিত্র হজ পালন করতে যাচ্ছি! মা, স্ত্রী, ভাইবোন, সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের সবাইকে জানাই বিষয়টি।

চার ভাইবোনের মধ্যে আমি সবার বড়। আমার বাবা মরহুম আবদুল বাতেন সরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা ছিলেন। ১৯৯১ সালে আমি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় তিনি ইন্তেকাল করেন। তখন মা প্রতিকূল অবস্থায় আমাদের ভাইবোনদের পড়াশুনা করিয়ে বড় করেন। বর্তমানে আমি ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) হিসেবে রূপায়ণ গ্রুপে সুদীর্ঘ ১১ বছর ধরে কর্মরত আছি। আমার কর্মস্থল ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) হিসেবে রূপায়ণ গ্রুপের স্বনামধন্য পত্রিকা দৈনিক দেশ রূপান্তর।

হজে যাওয়ার সংবাদ পাওয়ার পর কেটে গেল প্রায় ৩ মাস। হজের সমস্ত প্রস্তুতিও প্রায় শেষ। আমার পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে কেউ কেউ বলেছিলেন, হজে যাওয়ার আগে আমি যেন সব সম্পদ ভাগ করে সবাইকে সবকিছু বুঝিয়ে দিয়ে যাই, যদি আমি আর জীবিত না আসি। এ কথা শুনে পরিবারের কাছ থেকে আমি জীবনের সবচেয়ে বড় আঘাত পাই! আসলে আমার পরিবারের প্রধান হচ্ছেন আমার মা। তারপরও পরিবারের অনেকেই সম্পদ বণ্টনের ইচ্ছা পোষণ করেছেন, যেহেতু আমাদের কোথায় কী আছে, তা আমি জানি। সেক্ষেত্রে আমিই যেন সব ভাগ করে দিয়ে যাই।

তাদের কথামতো অ্যাডভোকেটের মাধ্যমে ফরায়েজ করে সব দলিল ও কাগজপত্র ফাইল করে বুঝিয়ে দিই। নিজের ইহরামের কাপড় ক্রয় করার সময় অনেক দুঃখভরা কণ্ঠে স্ত্রীকে বলেছিলাম, যদি বেঁচে দেশে ফিরে আসি তাহলে এই কাপড় দিয়ে আমার কাফন করবে! আর যদি ফিরে না আসি তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় যা হয় তাতেই শুকরিয়া।

১৯ জুন সোমবার রাত আড়াইটায় আমার ফ্লাইট। সব প্রস্তুতি শেষে এশার নামাজ আদায় করে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে একাই এয়ারপোর্টের উদ্দেশে রওনা হই। আশকোনা হাজি ক্যাম্পে গিয়ে আমার কোম্পানির সহযাত্রী ভাইদের সঙ্গে দেখা হয়। একসঙ্গে এয়ারপোর্টের সব কার্যক্রম শেষ করে ইহরামের কাপড় পরে বিমানে উঠে যাত্রা শুরু করি।

মঙ্গলবার জেদ্দা এয়ারপোর্টের কার্যক্রম শেষ করে সন্ধায় হোটেলে পৌঁছি। বেশ বড় একটা রুম। সেখানে আমি, শাহীন ভাই, মামুন ভাই, সাখাওয়াত ভাইসহ মোট চারজন। শুরুতেই আমরা ঠিক করে নিলাম, যেখানেই যাই, হজের সমস্ত কার্যক্রম একসঙ্গেই পালন করব এবং যত কষ্টই হোক না কেন রাগ করা যাবে না, অধৈর্য হওয়া যাবে না।

লাগেজ রুমে রেখে সবার সঙ্গে একত্রে ওমরাহ করার উদ্দেশে রওনা হই। কাবা শরিফ এরিয়ার মধ্যে ঢুকতেই এক অদৃশ্য অনুভূতিতে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়! সবচেয়ে বড় গেইট বরাবর দাঁড়াতেই যখন কাবার ওপর আমার দৃষ্টি পড়ল, তখন খুশিতে আমার চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারলাম না! যতক্ষণ না কাবা শরিফ স্পর্শ করেছি ততক্ষণ পর্যন্ত চোখের পানি আর থামল না। জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন পূরণ হয়েছে, সেই খুশির ব্যাপ্তি কত বড় তা একমাত্র আমার আল্লাহ জানেন! যখন কাবা শরিফ স্পর্শ করলাম তখন মনে হলো, আমি যদি সারা জীবন এখানে থাকতে পারতাম! যতক্ষণ শক্তি দিয়ে ধরে রাখতে পেরেছিলাম ততক্ষণ জড়িয়ে ধরেছিলাম। তারপর তাওয়াফ শেষে নামাজ পড়ি, সাফা-মারওয়া সাঈ করি এবং হালাল হয়ে হোটেলে যাই।

২৬ জুন হজের কার্যক্রম শুরু। রাতের খাবার শেষ করে মিনায় যাওয়ার উদ্দেশে রওনা হই। আজকের দিনটি আমার কাছে বিশেষ। আজকের দিনে আমি পৃথিবীর আলো দেখেছিলাম এবং আজকের দিনে আমি জীবনের সবচেয়ে মহৎ কাজটি করতে যাচ্ছি।

আলহামদুল্লিাহ, মিনার সব ইবাদত সম্পন্ন করে আমরা চলে গেলাম আরাফায়। সারা দিন আরাফায় অবস্থান করলাম। জীবনের সবচেয়ে বড় চাওয়া পূরণ হলো। মোনাজাতে আল্লাহর কাছে কান্নারত অবস্থায় নিজের সব কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা ভিক্ষা চাইলাম, আমার বর্তমান ও ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য এই মহান ইবাদতের তওফিক লাভের দোয়া করলাম, আমাদের শ্রদ্ধেয় চেয়ারম্যান মহোদয় জনাব লিয়াকত আলী খাঁন মুকুল স্যার, তার পরিবারের সব সদস্য এবং কোম্পানির উন্নতির জন্য অন্তর থেকে দোয়া ও সফলতা কামনা করলাম।

আসরের নামাজ শেষ করে আরাফার তাঁবুতে আমাদের কাফেলায় গিয়ে আমার রুমের সঙ্গীদের সবাইকে বললাম, এখান থেকে পায়ে হেঁটে কে কে মুজদালিফায় যাবেন? যেহেতু আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই আমলটি করেছেন। আমাদের চারজন ছাড়া আর কাউকে পাওয়া গেল না। আমরা হাঁটা শুরু করলাম। আলহামদুল্লিাহ, এই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে রাত আনুমানিক ৯টায় মুজদালিফায় পৌঁছলাম। মুজদালিফার সব আমল সম্পন্ন করে শয়তানকে মারার জন্য পাথর জোগাড় করে খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়ে পড়লাম। কারণ আগামীকাল অনেক কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

ফজরের নামাজ পড়ে জামারার উদ্দেশে রওনা হলাম। পথেই দেখলাম ট্রেন ব্যবস্থা। স্টেশনে যাওয়ার পর দেখি, এই ট্রেনে আমাদের যাওয়ার অনুমতি নেই। আবার হাঁটা শুরু করলাম এবং বড় জামারাতে পাথর নিক্ষেপ করে কোরবানির উদ্দেশে রওনা হলাম। কোরবানির বিষয়ে নানা অনিয়মের কথা শুনে আমি মোয়াল্লেমের সঙ্গে কথা বললাম, যাতে করে আমরা নিজেদের কোরবানি নিজেরাই দিতে পারি। সেই ব্যবস্থা করে রাখলাম। আমার এই কাজে আমার সঙ্গের সব হাজি ভাইয়েরা খুবই খুশি হয়েছিলেন।

কোরবানি শেষে মাথা মুণ্ডন করে হালাল হয়ে চলে গেলাম তাওয়াফ করতে। তাওয়াফ শেষ করে আবার মিনার উদ্দেশে রওনা হলাম। যাওয়ার সময় পথে ষাটোর্ধ্ব এক মুরব্বির সঙ্গে দেখা হলো। তিনি হারিয়ে গেছেন। তাকে নিয়েই মিনার উদ্দেশে রওনা হলাম এবং তার মোয়াল্লেমের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার কাছে পৌঁছে দিলাম। তার পরের দুই দিন হজের বাকি কাজগুলো শেষ করে হজ সম্পন্ন করলাম। আমার এই সফরে আমার মা, বাবা, স্ত্রী, ভাইবোন, সন্তানসহ সব আত্মীয়-স্বজনকে সওয়াব পৌঁছানোর উদ্দেশেও ওমরাহ ও তাওয়াফ সম্পন্ন করি।

হজ শেষ করে ১ জুলাই তায়েফের উদ্দেশে রওনা হলাম। প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেই স্থান থেকে ইসলাম প্রচার শুরু করেছেন, বুড়ির বাড়ি থেকে শুরু করে সমস্ত ঐতিহাসিক স্থানসমূহ দেখলাম। তারপর ৪ জুলাই প্রিয় মদিনার উদ্দেশে রওনা হলাম। মসজিদে নববী, মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রওজা শরিফ, কেবলাতাইন মসজিদসহ মদিনার সমস্ত জায়গায় ভ্রমণ ও ইবাদত করলাম।

নবীজির রওজা মোবারকে গিয়ে তাকে সালাম জানিয়ে বলি, ‘আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ’! হৃদয়ের গভীরতম আবেগ আর অশ্রুভেজা কণ্ঠে এই সালাম উচ্চারণ করতে করতেই বুকের ভেতর থেকে হু হু করে কান্না উঠে আসে। দরুদ পেশ করি। আমার ঠোঁট কাঁপে, গলা ধরে আসে, চোখে ঢল নামে। অথচ অন্তর তৃষ্ণার্ত হয়ে আছে আরেকটু কাছে যেতে, একটু আরজি পেশ করতে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি আপনার সেই উম্মত, যে হাজারো রাত আপনার নাম উচ্চারণ করে ঘুমিয়েছে। আমি আপনার সেই উম্মত, যে প্রতিটি মোনাজাতে আপনাকে সালাম জানিয়ে চোখের পানি ফেলেছে। আজ এই স্বপ্নসদৃশ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে শুধু এতটুকু আরজি আমার, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কেয়ামতের সেই ভয়ংকর মুহূর্তে আপনার একটু সুপারিশ চাই, যেদিন কেউ আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর সাহস করতে পারবে না, যেদিন কেউ কারও উপকারে আসবে না। সেই কঠিন মুহূর্তে আপনি যে সুপারিশ করবেন, সেই সুপারিশ লাভের কাঙাল আমি। আপনি তো সেই করুণার উৎস, যিনি তায়েফের রক্তাক্ত পথে নিজের উম্মতের জন্য দোয়া করেছেন! আপনি তো সেই ভালোবাসার দরিয়া, যিনি ওহুদের রক্তাক্ত মাঠে দাঁড়িয়ে উম্মতের ভবিষ্যতের জন্য কেঁদেছেন। হে দয়াল নবী! হে রহমাতুল্লিল আলামিন! অশ্রুসজল চোখে আপনার কাছে সুপারিশ কামনা করছি!

৭ জুলাই সকালে হারাম শরিফে ফজরের নামাজ পড়ে তাওয়াফ করছিলাম। এই সময় বাংলাদেশ থেকে ফোন এলো। জানানো হলো, আমি ছেলের বাবা হয়েছি! কাবা ঘরের সামনে বসেই ছেলেকে প্রথম দেখলাম। ছেলের জন্য ঠিক করে আসা নাম নিয়ে তার জীবনের বরকতের উদ্দেশে তার পক্ষ থেকে তাওয়াফ করলাম। মহান আল্লাহর কাছ থেকে এ যেন এক অনন্য উপহার! আমি হজের পাঁচ দিন আমার মোবাইল বন্ধ করে রেখেছিলাম এবং সবাইকে বলেছিলাম বেঁচে থাকলে ষষ্ঠ দিনে কথা হবে। এর মধ্যে বাংলাদেশে অনেক কিছু ঘটে গেছে। স্ত্রীর ডেঙ্গু হয়ে প্লাটিলেট ২৬ হাজারে নেমে আসে। হাসপাতালে ভর্তি হয়। কিন্তু সেসব আমি কিছুই জানিনি। আমি শুধু সবার জন্য আমার আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি। মহান আল্লাহ আমার সবকিছু হেফাজত করেছেন।

শেষবার যখন পবিত্র কাবা শরিফের দিকে তাকালাম, তখন অনবরত তাকিয়েই ছিলাম। চোখ ফেরাতে পারছিলাম না। কী যে এক অদ্ভুত আকর্ষণে আমাকে বেঁধে ফেলেছিল কাবা! মুহূর্তেই চোখমুখ ছিন্নভিন্ন হওয়ার মতো করে কান্না আসল। কাবার সান্নিধ্য ছেড়ে চলে যেতে হবে, এটা ভাবতেই পারছিলাম না। হৃদয়ে শুরু হলো প্রচণ্ড হাহাকার। কাবা থেকে বিদায়, মন তো মানে না! তবুও অবুঝ মনকে বুঝালাম, আবার আসব, বারবার আসব। মন তবুও মানে না! আমি দেশে চলে এলাম। আর আমার মন পড়ে থাকল কাবায়।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION