বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০২:৪৫ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
মহেশখালী উপজেলা: নুতন মুখ জয়নালই হলেন উপজেলা চেয়ারম্যান কক্সবাজার সদর:নুরুল আবছার বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত কুতুবদিয়া ব্যারিস্টার হানিফ বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত কক্সবাজার সদর উপজেলায় রুমানা আক্তার ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত গাজায় ইসরায়েলি বোমা হামলা, একই পরিবারের ৭ জন নিহত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী আজ ১১ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে ডর্টমুন্ড কক্সবাজারের ৩ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটগ্রহন চলছে: কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি কম টেকনাফে র‌্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক বাংলাদেশে ৩ দিনে পালিয়ে এসেছে মিয়ানমারের বিজিপির আরো ১২৮ সদস্য

‘বাবা আমার সাহস আছে, তুমি টেনশন করো না’

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
বুধবার দুপুরে ছেলের মরদেহ নিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের সামনে অপেক্ষায় ছিলেন খতনা করার সময় নিহত শিশু তাহমিদের বাবা ফখরুল আলম। এ সময় সন্তানহারা বাবার চোখের কোণ গলিয়ে নীরবে ঝরছিল অশ্রু। আবার কখনও করছিলেন বুকফাটা আর্তনাদ। অস্ত্রোপচারের আগে ছেলের সঙ্গে কথোপকথনের স্মৃতিচারণ করে ফখরুল বলছিলেন, ‘হাসপাতালে নেওয়ার আগে আমার বাচ্চাটা প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিল। বলছিল– বাবা, তুমি তো আমার পাশেই থাকবে। এরপর যখন অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয় তখন বলছিল– বাবা, আমার সাহস আছে, তুমি টেনশন করো না।’ অপারেশন থিয়েটারে ঢোকার আগেই হাত নেড়ে বিদায় নিয়েছিল তাহমিদ। কে জানত– এটাই সন্তানের শেষ বিদায়!

মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে সুন্নতে খতনা করানোর সময় মৃত্যু হয় মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আহনাফ তাহমিন আয়হামের (১০)। চিকিৎসকের অবহেলায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তার পরিবারের।

বুধবার মর্গের সামনে গিয়ে দেখা গেল, আত্মীয়স্বজন অনেকে তাহমিদের বাবাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এসময় ফখরুল বললেন, কাঁধে ছোট্ট সন্তানের লাশ বয়ে নিয়ে যাব– এটাও দেখা লাগল! কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলছিলেন, ‘ওই ঘরের মধ্যে তাহমিদকে রাখা হয়েছে। আমার তাহমিদ ওখানে থাকতে পারবে না। ও কখনও এসব জায়গায় থাকেনি। বের করে নিয়ে আসো। আমি ওকে বাসায় নিয়ে যাব। ওর আম্মু অপেক্ষা করছে।’

পরে ময়নাতদন্ত শেষে দুপুর ২টার দিকে তাহমিদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাকে গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা সদরের আলেখার চরে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এলাকার জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে খতনা করাতে নেওয়া হয় তাহমিদকে। তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর তার মা-বাবাকে জানানো হয়, ২০ থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগবে। আধা ঘণ্টার বেশি পার হলে অপারেশন থিয়েটারের দরজা নক করলে বলা হয়, আর অল্প কিছু সময় লাগবে। এভাবে এক ঘণ্টা পার হয়ে যায়। তখন ফখরুল ভেতরে ঢুকতে চাইলে বলা হয়, আর একটু সময় অপেক্ষা করুন। এরপর সন্দেহ হলে জোর করেই অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে যান ফখরুল। দেখেন, ছেলে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। চিকিৎসকরা বুকে হাত দিয়ে চাপাচাপি করছেন। এ সময় চিকিৎসক মোক্তাদিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি সঠিক উত্তর দেননি। অন্য হাসপাতালে পরিবারের সদস্যরা নিতে চাইলেও কর্ণপাত করেননি চিকিৎসক। এক পর্যায়ে তাহমিদের বাবাকে জোর করে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে দেওয়া হয়।

এদিকে তাহমিদের মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন, মোক্তাদির হোসেন ও মাহবুব হোসেন।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে— দুই বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানে মাহবুব অ্যানেসথেশিয়া দিয়ে অস্ত্রোপচার করে এলেও তার কোনো নিবন্ধন নেই। অ্যানেসথেশিয়া করতে হলে বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যানেসথোলজিস্টের সদস্য হতে হবে। তবে মাহবুব ওই সংগঠনের সদস্য নন। এ ছাড়া বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সদস্য না হয়েও তিনি চিকিৎসা করে যাচ্ছিলেন। রাজশাহীর একটি অখ্যাত প্রতিষ্ঠান থেকে মাহবুব ডিপ্লোমা করেছেন। গ্রেপ্তার আরেক চিকিৎসক মোক্তাদির গাজীপুরের ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেছেন।

ভয়েস/আআ/সূত্র: দেশ রূপান্তর অনলাইন।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION