শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৩ পূর্বাহ্ন
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
শিশুদের জেদ কিংবা গো ধরার অভ্যাস নতুন কিছু নয়। একটি নির্দিষ্ট বয়সে প্রতিটি শিশুই জেদ ধরে থাকে। মূলত বিষণ্নতা, ক্লান্তি, একঘেয়েমি ও অতিরিক্ত উত্তেজনার কারণে শিশুরা জেদি বা অতিরিক্ত রাগী হয়। পারিপার্শ্বিকতা ও বংশগত কারণেও তারা জেদি হয়।
তবে শিশুর অতিরিক্ত জেদ বা রাগ প্রত্যেক অভিভাবকের জন্য চিন্তার বিষয়। দেখা যায় অনেক বাবা-মা এই সাধারণ সমস্যাকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। আবার অনেক বাবা-মা শিশুর অহেতুক জেদের ব্যাপারে কি করবেন তার দিশা খুঁজে পান না।
তখনই দেখা যায় রাগের মাথায় শিশুকে বকাবকি শুরু করেন বাবা-মা। এতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠে। তাই কীভাবে বকা না দিয়ে শিশুর জেদ সামলানো যায় তারই কিছু পদ্ধতি তুলে দরা হল,
১. শিশু যখনই কান্নাকাটি শুরু করবে, কোনও কিছুর জন্য জেদ ধরবে, তখন তাকে বকাবকি না করে অন্য পরিবেশে নিয়ে যান। গল্পের বই পড়তে দিন বা ছবি আঁকতে দিন। আপনিও গল্প বলুন। গল্পের মধ্যে দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন।
২. মা-বাবার দেখাদেখি বাচ্চারা অনেক কিছু শিখে থাকে। এছাড়া শিশুরা অনেক অনুকরণপ্রিয়। তারা যদি মা-বাবাকে কারও সঙ্গে কঠোর ভাবে কথা বলতে দেখে অথবা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া করতে দেখে, তা হলে চট করে সেটাই রপ্ত করে নেবে। তার পর অজান্তেই তাদের আচরণে এমন ব্যবহারের প্রতিফলন দেখা দেবে। মা-বাবার মুখে মুখেও তর্ক করবে। তাই সন্তানের সামনে নিজেদের আচার-ব্যবহার নিয়েও সতর্ক থাকতে হবে।
৩. শিশুর সঙ্গে ব্যবহারও গুরুত্বপূর্ণ। অনেক পরিবারেই বাচ্চাদের মধ্যে তুলনা টেনে কথা বলা হয়, যা তাদের নরম মনে আঘাত করে। অনেকেই বুঝেনই না যে বাচ্চার সাথে কথায় কথায় তুলনা টানলে বা অযথা প্রতিযোগিতার মধ্যে বাচ্চাদের ঠেলে দিলে তা তাদের আত্মবিশ্বাসকে চুরমার করে দেবে। তখন হয় শিশু নিজেকে গুটিয়ে নেবে, না হলে নিজের ঘাটতিগুলোকে ঢাকতে প্রচণ্ড জেদি ও একগুঁয়ে হয়ে উঠবে।
৪. শিশুকে শাসন করবেন ঠিকই, কিন্তু কী ভাবে শাসন করছেন, সেটা আসল। এ ক্ষেত্রে শাসনের পদ্ধতিটা গুরুত্বপূর্ণ। শিশু্র প্রতি কটুকথা বা খারাপ ভাষার প্রয়োগ একেবারেই করা উচিৎ না। বকলেও বোঝাতে হবে, তার এই আচরণ সঠিক নয়। বাচ্চার মন বুঝে তাকে বন্ধুর মতো বোঝাতে হবে। কোনটা ঠিক ও কোনটা বেঠিক, সেটা উদাহরণ দিয়ে বলে বুঝিয়ে দিতে হবে।
৫. শিশুর মধ্যে ছোট থেকেই আত্মবিশ্বাস বাড়াতে হবে। তার ঘাটতিগুলো নিয়ে কথা না বলে তার ভালো দিকগুলো তুলে ধরতে হবে। হয়তো শিশু পড়তে বসতে চাইছে না। তাকে বকলে জেদ আরও বেড়ে যাবে। হয়তো সে খুব ভাল ছবি আঁকে। তখন সে দিকে তার প্রশংসা করে বলতে হবে, ভবিষ্যতে এই দিক নিয়ে এগোতে চায় কি না। নিজের পছন্দের দিকটিতে উন্নতি করতে হলে পড়াশোনাও যে কতখানি জরুরি, তা ভাল ভাবে বুঝিয়ে বলতে হবে।
৬. শিশুর মতামতকেও গুরুত্ব দিতে হবে। পরিবারে তারও যে একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা রয়েছে, সেটা বোঝাতে হবে বাবা-মাকে। অবহেলা বা তুচ্ছতাচ্ছিল্যে জেদ বাড়ে। নিজের পছন্দ না চাপিয়ে বাচ্চাকে নিজের জামা নিজেই পছন্দ করতে দিন। তা হলে ছোট থেকেই সে বুঝবে, তারও স্বাধীন মতামত আছে। কোনও কিছুই চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। এতে অন্যের প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা, দুটোই বাড়বে।
ভয়েস/আআ