রবিবার, ০৬ Jul ২০২৫, ০১:০২ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
চকরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে, নিহত ২ পুরাতন বন্দোবস্ত পরিবর্তন ছাড়া কাঙ্খিত বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব নয় সেনাসদস্যদের গুমে সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাসদর বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠনে একমত রাজনৈতিক দলগুলো পেকুয়ায় সাবেক এমপি জাফরের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ চকরিয়ায় খালে পাওয়া গেলো মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরের লাশ রামুর ইয়াবা কেলেঙ্কারি: উপজেলা ছাত্রদল আহ্বায়কের পদত্যাগ,  বিএনপি ও যুবদল নেতার পদ স্থগিত ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’, ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ দিবস’ চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনার দায়িত্বে ৬ মাসের জন্য নৌবাহিনী শেখ হাসিনার ৬ মাসের কারাদণ্ড আদালত অবমাননার দায়ে

সর্বময় কল্যাণের মাধ্যম নামাজ

মুনতাসির ইসলাম:

নামাজ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যা প্রাপ্তবয়স্ক ধনী-গরিব সব মুসলমানের ওপর ফরজ। নামাজ ছাড়া পরকালে মুক্তির কোনো উপায় নেই। নামাজ বেহেশতের চাবিকাঠি। নামাজকে বলা হয়েছে মুমিনের মেরাজ স্বরূপ। তাই মর্যাদার দিক থেকেও এ ইবাদত শ্রেষ্ঠ। নিয়মিত নামাজ আদায় করলে দুনিয়ার জীবনে শারীরিক ও মানসিকভাবে ব্যাপক প্রশান্তি লাভ করা যায়। আর পরকালে জান্নাত লাভের মূল শর্ত হলো এ নামাজ। তাই দুনিয়া ও আখেরাতে সর্বময় কল্যাণ অর্জনের মাধ্যম নামাজ। একজন মুসলমান হিসেবে নামাজ ছেড়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কেননা নামাজ হলো মুসলিম আর অমুসলিমের মধ্যে পার্থক্যকারী। এজন্য নামাজের ব্যাপারে সব মুসলমানের খুবই যত্নবান হতে হবে।

নামাজ মানুষকে যেকোনো অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে। নামাজ মানুষকে সার্বিক দিক দিয়ে পবিত্র রাখে এবং সুন্দর-সুশৃঙ্খল জীবন যাপনে সহায়তা করে। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে।’ (সুরা আনকাবুত ৪৫) নিয়মতভাবে নামাজ আদায় করার ফলে পাপমোচন হয় এবং সম্মান বৃদ্ধি পায়। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি বাড়ি থেকে পাক-পবিত্র হয়ে কোনো ফরজ নামাজ আদায় করার জন্য হেঁটে আল্লাহর ঘর মসজিদে যায়, তার প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে একটি পাপ ঝরে যায় এবং একটি করে মর্যাদা বৃদ্ধি পায়।’ (সহিহ মুসলিম) অন্য একটি হাদিসে এসেছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, বলো তো, যদি তোমাদের কারও বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে রোজ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার দেহে কোনো ময়লা থাকবে? তারা বললেন, তার দেহে কোনোরূপ ময়লা থাকবে না। রাসুল (সা.) বললেন, এ হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের উদাহরণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ তার বান্দার গুনাহগুলো মোচন করে দেন। (সহিহ বুখারি)

নামাজ আদায় করা এবং না করার ওপর মুসলমানদের পারলৌকিক সফলতা ও ব্যর্থতা বহুলাংশে নির্ভর করে। যারা নিয়মতভাবে নামাজ আদায় করবে, তারা সফল হবে ও মুক্তি পাবে। পক্ষান্তরে যারা নামাজ আদায় না করবে, তারা ব্যর্থ হবে। কেননা কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম হিসাব হবে নামাজের। যারা প্রথম হিসাবে আটকে যাবে, তাদের সফলতা ও মুক্তির পথ কণ্টকাকীর্ণ হয়ে যাবে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, কেয়ামতের দিন বান্দার কাজসমূহের মধ্যে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব নেওয়া হবে। যদি ঠিকমতো নামাজ আদায় করা হয়ে থাকে, তবে সে নাজাত পাবে ও সফলকাম হবে। যদি নামাজ নষ্ট হয়ে থাকে, তবে সে ব্যর্থ ও বিপর্যস্ত হবে। যদি ফরজ নামাজের মধ্যে কিছু কমতি হয়ে থাকে, তবে মহান আল্লাহ বলবেন, দেখো! বান্দার কোনো নফল নামাজ আছে কি না।’ থাকলে তা দিয়ে ফরজের ঘাটতি পূরণ করা হবে।’ (জামে তিরমিজি)

নামাজ বর্জন করা এক ভয়ংকর অপরাধ ও কুফরিতুল্য পাপ। নামাজ মুসলমানিত্বের পরিচয় বহন করে। পক্ষান্তরে নামাজ বর্জন কাফেরদের সাদৃশ্য তুলে ধরে। আজান দেওয়ার পর কোনো কাফের নামাজ আদায় করতে যায় না। তাই নামাজের সময় কোনো মুসলমানও যদি নামাজ আদায় না করে কিংবা মসজিদে না যায়, তাহলে কাফেরদের সঙ্গে তার এক ধরনের সাদৃশ্য সৃষ্টি হয়। এ কারণেই হাদিসে নামাজ বর্জনকে কুফরিতুল্য পাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, আমাদের ও কাফেরদের মধ্যে মুক্তির যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তা হলো নামাজ। সুতরাং যে ব্যক্তি নামাজ ছেড়ে দেয়, সে কুফরি কাজ করে। (জামে তিরমিজি) এ কারণেই হানাফি, শাফেয়ি ও মালেকি মাজহাব মতে বিনা ওজরে নামাজ বর্জনকারীকে পাপিষ্ঠ ফাসেক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর হাম্বলি মাজহাব মতে অকারণে নামাজ বর্জনকারী ব্যক্তিকে কাফের বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সর্বোপরি নামাজকে মুসলমান ও কাফেরদের মধ্যকার পার্থক্য নিরূপক বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। জাবের (রা.) বলেন, আমি মহানবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, বান্দা এবং শিরক ও কুফরের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে নামাজ ছেড়ে দেওয়া। (সহিহ মুসলিম) নামাজ বর্জন করার পরিণাম অত্যন্ত ভয়ংকর ও বিভীষিকাময়। যারা বিনা ওজরে নামাজ বর্জন করবে, তাদের জন্য রয়েছে নিদারুণ নরকের যন্ত্রণা। জান্নাতের অধিবাসী লোকেরা জাহান্নামিদের জিজ্ঞেস করবে, তোমাদের কীসে জাহান্নামে আবদ্ধ করেছে? তারা বলবে, আমরা নামাজ পড়তাম না। (সুরা মুদ্দাসসির ৪২-৪৩) তাই আসুন, দুনিয়ার জীবনে প্রশান্তি এবং পরকালে মুক্তিলাভের জন্য নিয়মিতভাবে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি। এতে আশা করা যায় মহান আল্লাহ আমাদের ছোটখাটো ভুলত্রুটি ক্ষমা করে মুক্তি দান করবেন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION