শুক্রবার, ২৭ Jun ২০২৫, ০৬:০৯ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

ট্রাম্পের বিজয়ে অর্থনীতির লাভ-ক্ষতি

গোবিন্দ শীল:
অবশেষে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ট্রাম্প ছাত্রজীবন থেকেই একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে শুরু করেন। কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় ট্রাম্প তার ব্যবসায়িক জীবন শুরু করেন ফিলাডেলফিয়া রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করার মধ্য দিয়ে। ১৯৬৮ সালে তার স্নাতক শিক্ষা শেষ করার পর তিনি নিউ ইয়র্কে ফিরে আসেন এবং তার বাবার ব্যবসায় পুরো সময় ব্যয় করেন। ১৯৭০-এর দশকে, ট্রাম্প নিউ ইয়র্ক সিটির বাইরে ভার্জিনিয়া, ওহাইও, নেভাদা এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় সম্পত্তি ক্রয় করে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে থাকেন। একই সময়ে, তিনি রিয়েল এস্টেট কার্যক্রমকে তার বাড়ির কাছাকাছি বিস্তৃত করার পরিকল্পনা করেন। নিউ ইয়র্কের বাইরের বরো থেকে ঐতিহ্যগতভাবে আরও সমৃদ্ধ এবং ‘অভিজাত সমাজ’ এলাকা ম্যানহাটনে চলে যান। ১৯৭০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠানগুলো ম্যানহাটনের আকাশচুম্বী ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ব্যবসায়ী হিসেবে তার যশ বাড়ে যখন তিনি ১৯৭৬ সালে তৎকালীন দেউলিয়া হয়ে যাওয়া পেন সেন্ট্রাল রেলরোডের কমোডোর হোটেলের জমিতে গ্র্যান্ড হায়াত হোটেল তৈরি করেন। বরাবরই ব্যবসায়ী, এক সময়ের মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ট্রাম্পের এ সময়টিতে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের অর্থনীতি কেমন যাবে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুইং বা দোদুল্যমান রাজ্যের মতো ট্রাম্পের রাজনৈতিক ইতিহাসও দোলায়মান। তিনি রাজনৈতিক দল বদল করেছেন বহুবার। প্রথমে তিনি ১৯৮৭ সালে নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনে রিপাবলিকান হিসেবে নিবন্ধন করেন। পরে ১৯৯৯ সালে রিফর্ম পার্টি, ২০০১ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং ২০০৯ সালে আবারও রিপাবলিকান পার্টিতে ফিরে আসেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়তো মহান রাজনৈতিক নেতা হয়ে ওঠেননি, কিন্তু সাধারণ মার্কিন নাগরিকদের মনের কথা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। তিনি সুস্পষ্টভাবে তার রাজনৈতিক প্রচারগুলোতে বলেছেন, তিনি ক্ষমতায় এলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে আর ইসরায়েলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের মধ্যে যুদ্ধ বন্ধ করার উদ্যোগ নেবেন। এই নির্বাচন নিয়ে ট্রাম্প বড় ধরনের ঝামেলার মধ্যে ছিলেন। প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৪টি ফৌজদারি মামলা কার্যকর করা হয়েছিল। এর মধ্যে অন্যতম হলো ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলকে উল্টে দেওয়ার চেষ্টা (জো বাইডেনের বিপক্ষে)। তিনি জেনেশুনে নির্বাচনী জালিয়াতির বিষয়ে মিথ্যা ছড়িয়েছিলেন এবং বাইডেনের বিজয়ের সার্টিফিকেট বিলম্বিত করতে এবং ক্ষমতায় থাকার জন্য ৬ জানুয়ারি ২০২১-এ ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গাকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তিনি এক ইতিহাস গড়লেন। ট্রাম্প গত ১২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি হোয়াইট হাউজ ত্যাগ করার পর নির্বাচন করে বিজিত হলেন। এর আগে ১৮৯২ সালে প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড ক্ষমতা হারিয়ে পরে আবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউজে ফিরে আসেন। বার্তা সংস্থা এপির একটি ভোটকাস্ট অনুযায়ী, ১০ জনের মধ্যে ৪ জন ভোটার অর্থনীতি এবং চাকরিকে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করেছেন। আর, মোটামুটি ১০ জনের মধ্যে ২ জন ভোটার বলেছেন যে শীর্ষ ইস্যুটি হলো অভিবাসন।

ট্রাম্প জেতার কারণে মার্কিন অর্থনীতিতে প্রভাব : ডোনাল্ড ট্রাম্প নাগরিকদের বলেছেন, চাকরি হারানো মার্কিনির দুঃখ তিনি বোঝেন এবং এ কারণে বিশ্বায়ন, অটোমেশন এবং বাণিজ্য চুক্তির কারণে চাকরি হারানো মানুষজনের জন্য তিনি কাজ করবেন। ট্রাম্প জনগণের এই উদ্বেগগুলোকে পুঁজি করে দেশীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে, যেমন তিনি তিন যুগের মতো পুরনো নাফটা চুক্তি বাতিল করে ইউএসএমসিএ (The United States Mexico Canada Agreement) চালু করেন। এই চুক্তির মূল কথা হলো মার্কিন বাজারে মোটরগাড়ি (কার) শুল্কবিহীন প্রবেশ করতে হলে গাড়িগুলোর যন্ত্রাংশের ৭৫ শতাংশ অবশ্যই মেক্সিকো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডায় তৈরি হতে হবে। এখানে আরেকটি বড় বিষয় ছিল মেক্সিকান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে দেওয়া। এই বিধিমালা অনুযায়ী মোটর পার্টসের ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ যন্ত্রাংশ ২০২৩ সালের মধ্যে এমন শ্রমিক দিয়ে উৎপাদন করতে হবে যাদের আয় বাড়িয়ে প্রতি ঘণ্টায় করতে হবে কমপক্ষে ১৬ মার্কিন ডলার। এই চুক্তির কারণে মার্কিন দুগ্ধ খামারিরা কানাডিয়ান দুগ্ধের বাজারে আরও বেশি প্রবেশাধিকার অর্জন করেছেন। ট্রাম্পের বিজয় তেল ও গ্যাস খাতের উৎপাদনকে উৎসাহিত করবে। কেননা তিনি জলবায়ু উষ্ণায়নের বিষয়টি উপলব্ধি করতে চান না। তিনি ডেমোক্র্যাট প্রার্থীর, তার কথায়, ‘শিল্প-হত্যা বিধি’ প্রত্যাহার করে ‘আমেরিকান শক্তি উন্মোচন করার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ট্রাম্প আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত জো বাইডেনের নির্বাহী আদেশ বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা কমলা হ্যারিস এক বছর আগে চালু করতে সহযোগিতা করেছিলেন। এটি কেবল ইলন মাস্ককেই সন্তুষ্ট করবে না, যিনি শিল্পের ‘অতিনিয়ন্ত্রণের কারণে শ্বাসরোধ’ এড়াতে ট্রাম্পকে সমর্থন করেছেন। মাস্ক বিশ্বাস করেন কঠোর নিয়মের কারণে চীনের বিরুদ্ধে মার্কিনিদের এআই প্রতিযোগিতা থমকে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বড় বড় করপোরেশনের আধিপত্য হ্রাস পেতে পারে। এআই মডেলের বিকাশ বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নানা ধরনের উদ্বেগ তৈরি করেছে। এগুলো ভবিষ্যৎ নানা ধরনের ঝুঁকি তৈরি করা, বৈষম্যকে বাড়িয়ে দেওয়াসহ জাতীয় নিরাপত্তাকে ক্ষুণœ করতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। নতুন ট্রাম্প প্রশাসন ব্যক্তিগত পুঁজি এবং জলবায়ু ঝুঁকির মতো বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্র্তৃক আরও অধিক তথ্য জনগণের সামনে তুলে ধরা থেকে কর্র্তৃপক্ষকে বিরত করতে পারে। ট্রাম্প বলেছেন, আমদানিতে ব্যাপক শুল্ক আরোপ করার পাশাপাশি আমেরিকানদের জন্য জিনিসপত্রের দাম কমাতে তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অর্থনীতিবিদরা বলছেন এটি বিপরীতমুখী একটি নীতি। এটি বরং মার্কিন ভোক্তাদের অপকার করবে। মার্কিন ন্যাশনাল রিটেইল ফেডারেশন সম্প্রতি বলেছে যে, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক কার্যকর করা হলে মার্কিন গ্রাহকরা বছরে ৪৬ বিলিয়ন থেকে ৭৮ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ খরচ করার ক্ষমতা হারাতে পারেন।

ট্রাম্পের বিজয় বিমান শিল্পের জন্য কোনো ভালো খবর বয়ে আনবে না। তিনি চীন থেকে পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার এবং অন্যান্য সমস্ত আমদানিতে কমপক্ষে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এতে করে চীন, যারা কি না যথেষ্ট সংখ্যক বোয়িং কিনে থাকে, সেটি তারা কমিয়ে দিতে পারে। শুধু তাই নয়, ট্রাম্প বলেছেন যে কার্বন দূষণ সংক্রান্ত নিয়মগুলো মোটর উৎপাদন শিল্পকে ‘হত্যা’ করবে ফলে এ সংক্রান্ত কার্যকর নীতিগুলো অবশ্যই বাদ দিতে হবে। এতে করে যারা বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করছেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সেই সঙ্গে যেসব ক্রেতা ইভি (ইলেকট্রিক ভেহিকল) কেনার জন্য বাইডেন প্রবর্তিত ৭ হাজার ডলারের ট্যাক্স-ঋণ পাওয়ার উপযুক্ত ছিলেন, তা তারা পাবেন না।

অর্থনীতিবিদরা কী বলছেন : ট্রাম্পের তথাকথিত ভোক্তাদের সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি অর্থনীতিবিদদের মধ্যে সংশয়বাদ তৈরি করেছে। মূলধারার অর্থনীতিবিদরা শুল্ক আরোপ করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বৃদ্ধি নিয়ে সন্দিহান। পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকসের একটি প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছে যে, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক ২০২৬ সালের মধ্যে মার্কিন অর্থনীতি থেকে এক শতাংশ পয়েন্ট কমিয়ে দিতে পারে এবং আগামী বছরে মুদ্রাস্ফীতি ২ শতাংশ পয়েন্ট বেড়ে যেতে পারে। এদিকে, শস্য এবং চিনিসহ পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপ করলে উপকরণগুলোর দাম বেড়ে যাবে। আর তাতে করে খাদ্য ও পানীয় নির্মাতারা তাদের মার্জিন রক্ষার জন্য ভোক্তাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে নেবেন।

শুল্ক বাণিজ্যের খরচ বৃদ্ধি করবে, তৈরি করবে প্রতিশোধ স্পৃহা : রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনের সঙ্গে রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের বাণিজ্যযুদ্ধ ২০১৮-১৯ সাল থেকে বেশি খারাপ হতে পারে। ওই সময়ে চীনও প্রতিশোধ নিতে শুল্ক আরোপ করেছিল, যা মার্কিন খামারিদের বেশ ক্ষতির কারণ হয়েছিল। শুধু তাই নয়, বেইজিং তার আমদানি বাণিজ্য ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সঙ্গে বাড়িয়ে দিয়েছিল। অর্থনীতিবিদদের মতামত টেনে বার্তা সংস্থাটি বলছে ট্রাম্পের শুল্ক পরিকল্পনা সম্ভবত তার মতে সবচেয়ে ফলপ্রসূ অর্থনৈতিক নীতি যা কি না মার্কিন আমদানি শুল্কের হারকে ১৯৩০-এর দশকের স্তরে নিয়ে যেতে পারে। এতে করে মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে যাবে, মার্কিন-চীন বাণিজ্যে ধস নামবে, প্রতিশোধমূলক বাণিজ্যিক পরিবেশ তৈরি হবে এবং সরবরাহ চেইনগুলো ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ন্যাশনাল কর্ন গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং আমেরিকান সয়াবিন অ্যাসোসিয়েশন পূর্বাভাস দিয়ে বলছে, চীনের সম্ভাব্য নতুন বাণিজ্যযুদ্ধ মার্কিন শস্য রপ্তানি খাতের অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে। এটি সম্প্রতি অর্জন করা অভ্যন্তরীণ নিম্ন মূল্যকে ধাক্কা দিতে পারে এবং ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনায় চীনের আমদানি স্থানান্তরকে আরও শক্তপোক্ত করতে পারে। পেনসিলভানিয়ার অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের প্রধান মার্কিন অর্থনীতিবিদ বার্নার্ড ইয়ারোস বলছেন, সামগ্রিকভাবে মার্কিন-চীন বাণিজ্য ট্রাম্পের ২০১৮-১৯-এ চীনের শুল্ক প্রতিশোধের কারণে যে পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, এবার তার চেয়ে তা ৭০ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে। ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ট্রাম্পের আগের সময়কার ওই নীতি বজায় রেখেছিলেন এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বাড়িয়েও দিয়েছিলেন। এই শুল্ক যুদ্ধের ডামাডোলে ইউরোপে মার্কিন হুইস্কি রপ্তানি কমে যেতে পারে।

বাংলাদেশ লাভবান হতে পারে : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে শুল্ক যুদ্ধ এবং বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক দামের কারণে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের একক বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে এদেশের পোশাকের জাহাজীকরণ বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এক হিসাবে দেখা যায়, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ থেকে মার্কিন পণ্য আমদানির পরিমাণ ছিল ৮.৩ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২ থেকে ২৫.৭ শতাংশ (২.৯ বিলিয়ন) কম, কিন্তু ২০১৩ সাল থেকে ৫৫ শতাংশ বেশি। আরেক হিসাবে দেখা যায়, ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ ৫.৮৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছিল, যা ২০২২ সালে ছিল ৯ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ। বাণিজ্য হ্রাস পাওয়ার কারণ ছিল বোনা পোশাকের রপ্তানি কমে যাওয়া। অনেকে বলেন, শ্রমিকদের নানাবিধ অধিকার বাস্তবায়ন না করাতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে পণ্য কেনা কমিয়ে দেয়। তবে, করোনা মহামারীর অব্যবহিত পরে বাংলাদেশ ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে কিছু কিছু অর্ডার নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। সে সময় চীনের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিনিদের নানাবিধ সমস্যা চলছিল। অর্থাৎ, ওই দুদেশের বাণিজ্যযুদ্ধ বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য আশীর্বাদ হিসেবে এসেছিল। শুধু বাংলাদেশ নয়, ভিয়েতনাম ও চিলিরও রপ্তানি যথেষ্ট বেড়ে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। এবার সে রকম পরিস্থিতি হলে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক ছাড়াও সফটওয়্যার, চিংড়ি ও হিমায়িত খাদ্য, ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য, চামড়াজাত পণ্য ইত্যাদির রপ্তানি বেড়ে যেতে পারে।

লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক

govindashil@gmail.com

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION