বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫১ অপরাহ্ন
মাওলানা মাহাদী হাসান (পলাশ):
পৃথিবী মানুষের স্থায়ী আবাসস্থল নয়। মানুষ খুবই অল্প সময়ের জন্য পৃথিবীতে এসেছে। পৃথিবীটা মূলত মানুষের জন্য পরীক্ষার জায়গা। এখানে মহান আল্লাহর নির্দেশমতো নিজের জীবন পরিচালনা করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে পরকালে থাকবে চিরস্থায়ী জান্নাত। অবশ্য জান্নাতের আকাক্সক্ষা প্রত্যেক মুমিনেরই আছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, জান্নাতে একটি লাঠি সমপরিমাণ স্থান দুনিয়া ও দুনিয়াতে যা কিছু আছে, তা থেকে উত্তম। (সহিহ বুখারি) হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, জান্নাতে যা আছে এর থেকে একটি নখ যা উঠাতে পারে, এতটুকু পরিমাণ জিনিসও যদি দুনিয়াতে প্রকাশ পায় তাহলে আকাশ ও পৃথিবীর সবদিক সুসজ্জিত হয়ে যেত। জান্নাতের কোনো লোক যদি পৃথিবীতে উঁকি দিত এবং তার কংকনের সৌন্দর্য যদি প্রতিভাত হতো, তাহলে সূর্যের আলো যেমন তারার আলোকে মøান করে দেয়, তেমনিভাবে কংকনও সূর্যের আলোকে মøান করে দিত। (তিরমিজি) জান্নাত আটটি। বিস্তারি তুলে ধরা হলো।
জান্নাতুল ফেরদাউস : কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয় যারা ইমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদের মেহমানদারির জন্য রয়েছে জান্নাতুল ফেরদাউস। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। তারা সেখান থেকে অন্য কোথাও স্থানান্তরিত হতে চাইবে না।’ (সুরা কাহাফ ১০৭-১০৮)
জান্নাতুল মাওয়া : কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘যে তার প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান হওয়ার ভয় করে আর নিজ আত্মাকে কুপ্রবৃত্তি থেকে ফিরিয়ে রাখে, নিশ্চয় জান্নাতুল মাওয়া তার বাসস্থান।’ (সুরা নাজিয়াত ৪০-৪১)
জান্নাতু আদন : কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘তাদের রবের কাছে তাদের পুরস্কার হবে জান্নাতু আদন। যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত হবে। সেখানে তারা থাকবে স্থায়ীভাবে। আল্লাহ তাদের ওপর সন্তুষ্ট। তারাও আল্লাহর ওপর সন্তুষ্ট। এটা তার জন্য যে স্বীয় রবকে ভয় করে।’ (সুরা বায়্যিনাহ ৮)
জান্নাতুন নাঈম : কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই মুত্তাকিদের জন্য তাদের রবের কাছে রয়েছে জান্নাতুন নাইম।’ (সুরা কলম ৩৪)
দারুস সালাম : কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, আর আল্লাহ দারুস সালাম তথা শান্তি ও নিরাপত্তার আলোয়ের প্রতি আহ্বান জানান এবং যাকে ইচ্ছা সরল পথপ্রদর্শন করেন।’ (সুরা ইউনুস ২৫)
দারুল খুলদ : কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘বলুন, সেটা উত্তম, না দারুল খুলদ তথা স্থায়ী জান্নাত উত্তম, মুত্তাকিদের যেটার ওয়াদা দেওয়া হয়েছে? তা হবে তাদের পুরস্কার ও প্রতাবর্তনস্থল। সেখানে তারা যা চাইবে তাই তাদের জন্য থাকবে স্থায়ীভাবে। এটি তোমার রবের ওয়াদা।’ (সুরা ফুরকান ১৫-১৬)
দারুল মুকামাহ : কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আর তারা বলবে, সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিয়েছেন। নিশ্চয় আমাদের রব পরম ক্ষমাশীল, মহাগুণগ্রাহী। যিনি নিজ অনুগ্রহে আমাদের দারুল মুকামাহ তথা স্থায়ী নিবাসে স্থান দিয়েছেন, যেখানে কোনো কষ্ট আমাদের স্পর্শ করে না এবং যেখানে কোনো ক্লান্তিও আমাদের স্পর্শ করে না।’ (সুরা ফাতির ৩৪-৩৫)
দারুল কারার : কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘হে আমার সম্প্রদায়! পার্থিব এ জীবন (অস্থায়ী) ভোগ্য বস্তু মাত্র। আর আখেরাতই হলো দারুল কারার তথা চিরকালীন আবাসস্থল।’ (সুরা মুমিন ৩৯) আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাকেই জান্নাতে যাওয়ার তওফিক দান করুন। আমিন।
ভয়েস/আআ