বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৩২ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
কক্সবাজার অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক রূপ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২ অক্টোবর থেকে এ বিমানবন্দর দিয়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিমানবন্দরটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ এখনও বাকি থাকায় ঘোষিত সময়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু নিয়ে সংশয় রয়েছে। তবে বেবিচক বলছে, আগামী সেপ্টেম্বরে বাকি কাজ শেষ হবে এবং নির্ধারিত সময়েই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিমানবন্দরটির টার্মিনাল ভবনের সব কাজ এখনও শেষ হয়নি। প্যাসেঞ্জার অ্যারাইভাল ও ডিপারচার লাউঞ্জ, ডিপারচার কনভেয়ার বেল্ট, ইমিগ্রেশন কাউন্টারের কাজ এখনও বাকি আছে। নির্ধারিত সময়ে এগুলো শেষ করা যাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এছাড়া এয়ারলাইন্সগুলোর প্রস্তুতিরও বিষয় রয়েছে। যদিও রানওয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত।
বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সূত্রের দাবি, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকি কাজগুলো শেষ হয়ে যাবে। ২ অক্টোবর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনায় এয়ারলাইন্সগুলোকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বেবিচকের বোর্ড সদস্য (এটিএম) গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. নুর-ই-আলমের সই করা চিঠিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুরোধ করা হয়েছে। তারা কোন ধরনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে এবং কোন গন্তব্যে ফ্লাইট চালু করবে, তা লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছৈ। বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোকেও একই চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেবিচক সদস্য (অপারেশন অ্যান্ড প্ল্যানিং) এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মাহবুব খান বলেন, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরে সবধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজ চলছে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর এ কাজ শেষ হয়ে যাবে। নিয়ম অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরুর আগেই আইকাও কর্তৃপক্ষকে জানাতে হয়। দাফতরিকভাবে তা জানানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, সব প্রস্তুতি নিচ্ছি। এয়ারলাইন্সগুলোকে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাদের ফিরতি চিঠি এখনও পাইনি। সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবো।’
নিয়ম অনুযায়ী, কোনও দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করতে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটির (আইকাও) কিছু গাইডলাইন মানতে হয়। বাংলাদেশ সরকার সেই গাইডলাইন মেনেই কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক ঘোষণা করেছে। এ বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে গত ৭ আগস্ট আইকাও কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে বেবিচক।
সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, এ ঘোষণা দেশের বিমান খাত ও পর্যটন শিল্পের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের শহর কক্সবাজারের এই বিমানবন্দরে সাগরের জলরাশি ছুঁয়ে ওঠানামা করবে প্রতিটি উড়োজাহাজ। সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হলে বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি কক্সবাজার ও পার্শ্ববর্তী এলাকার অর্থনীতি, হোটেল-মোটেল ব্যবসা, রিসোর্ট ও পরিবহন খাতেও নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু হলে কক্সবাজারে শুধু অবকাশযাপন নয়, আন্তর্জাতিক সম্মেলন, করপোরেট ইভেন্ট ও বৃহৎ পরিসরের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম আয়োজনও সহজ হবে। এতে স্থানীয় কর্মসংস্থানের সুযোগও ব্যাপক হারে বাড়বে।
২০০৯ থেকে ২০১৩ সালের মেয়াদে কক্সবাজার বিমানবন্দরের উন্নয়নকাজ শুরু হয়। এরপর ২০১৫ সালে যোগ হয় আন্তর্জাতিকমানে উন্নীত করার নতুন ধাপ। ভৌগোলিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ায় কক্সবাজার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। এ জন্য সাগরপাড়ের এ বিমানবন্দরকে পর্যটক ছাড়াও যেকোনও ফ্লাইটের রি-ফুয়েলিংয়ের জন্য টেকনিক্যাল ল্যান্ডিংয়ের লক্ষ্যে আঞ্চলিক হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চায় সরকার।
ভয়েস/আআ/বাংলা ট্রিবিউন