বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৬ অপরাহ্ন
লাইফস্টাইল ডেস্ক:
দীর্ঘ নয় মাস গর্ভধারণের পর একজন মা সন্তান প্রসব করেন। এই নয়টি মাস যে মায়ের খুব আনন্দে কাটে তা নয়, এই সময়ের মধ্যে তাকে অনেক ভয় আর উদ্বেগের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। এই সময়ের মধ্যে মায়ের শরীরে অনেক পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তন বাইরে এবং শরীরের ভেতরে ঘটে। সেই সঙ্গে মায়ের মানসিক পরিবর্তন ঘটে। একজন মা না ঘুমিয়ে অনেক রাত কাটিয়ে দেন। সন্তানের জন্ম সিজারে হোক অথবা নরমাল ডেলিভারিতে হোক গর্ভাকালে মায়ের শরীরে যে পরিবর্তন আসে, সেই পরিবর্তন ঠিক হতে কমপক্ষে তিন মাস সময় লাগে।
প্রফেসর ডা. সেলিনা আক্তার, গাইনোকলজিস্ট বলেন ‘সন্তান প্রসবের পরে প্রথম বিয়াল্লিশ দিনে মায়ের শরীরে ও মনে অনেক পরিবর্তন আসে। সেজন্য এই সময়ের মধ্যে মায়ের সঠিক যত্ন নিশ্চিত করতে হবে। নতুন শিশুকে দেখার জন্য দেখা যায় যে, দফায় দফায় বাসায় মেহমান আসতে শুরু করে। বাসায় নানা কারণে ফটোসেশন চলতে থাকে। এতে মায়ের মানসিক স্বস্তি আসে না। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে মা ঠিকমতো ঘুমাতে পারছেন কিনা, পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছেন কিনা, বিশ্রাম নিতে পারছেন কিনা। আমরা যদি আনুষ্ঠানিকতা ও সামাজিকতা প্রথম ৪২ দিনে না করি, তাহলে মা এবং শিশু দুইজনের জন্যই নিরাপদ। নবজাতক যদি বার বার অনেকজনের সংস্পর্শে যায়, তাহলে নানা ধরনের সংক্রমণে ভুগতে পারে। আবার এই পরিস্থিতির কারণে নতুন শারীরিক মানসিক সমস্যাগুলো ঠিকমতো কাটিয়ে উঠতে পারেন না। ’
এক. মা যখন শিশুকে বুকের দুধ পান করাচ্ছেন, তিনি যথাযথ প্রাইভেসি পাচ্ছেন কিনা সেই বিষয়ে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। শিশুকে ঠিকমতো বুকের দুধ পান করাতে না পারলে মা অনেক সময় দুঃশ্চিন্তায় পড়ে যান। তাই তার প্রাইভেসি নিশ্চিত করতে হবে।
দুই. প্রথম ৪২ দিন শিশু রাতে ঠিক মতো ঘুমায় না। প্রায় সারারাতই জেগে থাকে। আর শিশু যখন জেগে থাকে সেই শিশুর সঙ্গে মাকেও জেগে থাকতে হয়। রাত জাগার ফলে মায়ের শরীরে ক্লান্তি ভর করে। পরিবারের সদস্যদের খেয়াল রাখতে হবে মা ঠিক মতো ঘুমাতে পারছেন কিনা। তাকে সেই সুযোগটা করে দিতে হবে।
তিন. সন্তান প্রসবের পরে প্রথম ৪২ দিন নতুন মায়ের নিয়মিত ব্লাড প্রেসার চেক করতে হবে। তার যদি আগে ডায়াবেটিস থেকে থাকে, তাহলে রক্তে সুগারের পরিমাণ চেক করতে হবে। মায়ের শরীরে যদি রক্তের অভাব থাকে, তাহলে ডাক্তার যেসব খাবার খেতে বলেছেন সেগুলো খাওয়াতে হবে।
চার. যেহেতু প্রথম ছয় মাস শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ পান করাতে বলা হয়, সেজন্য মা ঠিকমতো পানি পান করছেন কিনা সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
পাঁচ. অনেক সময় পরিবারের চাওয়া থাকে ছেলে কিন্তু মা যদি কন্যাশিশুর জন্ম দেন বা পরিবারের চাওয়া থাকে মেয়ে তখন মা যদি ছেলেশিশুর জন্ম দেন তাহলে তাকে অনেক অসংলগ্ন কথা শুনতে হয়। পরিবারের সদস্যদের এসব কথা বলা বন্ধ করতে হবে। ছেলে বা মেয়ে হওয়ার পেছনে মায়ের কোনো ভূমিকা নেই- সুতরাং তাকে কথা শোনানো যাবে না।
ভয়েস/আআ