রবিবার, ২৯ Jun ২০২৫, ০৯:০২ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশের সংগীত জগতের জীবন্ত কিংবদন্তি রুনা লায়লার ৭০তম জন্মদিন আজ (১৭ নভেম্বর)। এখনও তাঁর অনন্য গায়কী সংগীতপিপাসুদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। অসংখ্য কালজয়ী গান উপহার দিয়ে তিনি পেয়েছেন সবশ্রেণির জনপ্রিয়তা। তিনি তারকাদের তারকা। তাঁর তুলনা শুধুই তিনি। জন্মদিন উপলক্ষে ফোনে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছেন গুণী এই শিল্পী।
প্রশ্ন: এবার তো আপনার বিশেষ জন্মদিন, ৭০তম।
রুনা লায়লা: না! ৭০ কোথায়? ১৭ (হাসি)! এটাতেই থাকতে চাই।
প্রশ্ন: ৭০ বছর তো বিশেষ সংখ্যা, এটা নিয়ে আলাদা করে কিছু ভেবেছেন?
রুনা লায়লা: ৭০ বছর চিন্তা করলে ভয়ই লাগে! সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজার শুকরিয়া যে, সুস্থ আছি এবং এখনও কাজ করছি, গান করছি। শ্রোতা-ভক্তদের যে ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও দোয়া-আশীর্বাদ আছে, এটাই বোধহয় আমাকে এখনও সুস্থ রেখেছে। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
প্রশ্ন:: চ্যানেল আইয়ের ‘তারকাকথন’ অনুষ্ঠানে আজ আপনাকে বিশেষ সম্মান জানানো হবে। লালগালিচা, নতুন গানসহ আরও অনেক কিছুই হয়তো হবে। এ নিয়ে অনুভূতি কেমন?
রুনা লায়লা: আমাকে এতখানি সম্মান দেওয়া হচ্ছে, এটা ভীষণ আনন্দের ব্যাপার। আমাকে কতটা ভালোবাসে বলে এত বড় আয়োজন করেছে। এজন্য ফরিদুর রেজা সাগর ও শাইখ সিরাজকে অনেক ধন্যবাদ। আরও যারা এর সঙ্গে যুক্ত আছেন, সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। যদিও তারা আমাকে এসব কিছু বলেননি। শুধু জন্মদিন উপলক্ষে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কিন্তু কী কী হবে জানি না। তোমরাই বলে দিচ্ছো! এটা ওদের সারপ্রাইজ ছিল, কিন্তু সারপ্রাইজ তোমরা নষ্ট করে দিলে! আর আমাকে নিয়ে একটা গান তৈরি হয়েছে, এটা তো বড় ব্যাপার। প্রত্যাশা করিনি যে, এত বেশি আয়োজন করবেন তারা।
রুনা লায়লা: আমার জন্মদিনের সব আয়োজন উনিই করেন। পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে আমাদের বাড়িতে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠান হবে। এখানে আমার কিছু করতে হয় না। আর একটা না একটা সারপ্রাইজ তো থাকেই।
প্রশ্ন: আপনার ৭০ বছরের জীবনের বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনকে দিয়েছেন। কখনও কি ভেবেছেন, এই দেওয়ার বিপরীতে কী পেলাম?
রুনা লায়লা: যতটুকু পেয়েছি, অনেক কিছু পেয়েছি। আমার কোনও অপ্রাপ্তি নেই। ভাবলে অবাক লাগে, সৃষ্টিকর্তা আমাকে এত কিছু দিয়েছেন! এই যে মানুষের ভালোবাসা, শ্রদ্ধা; এটাই সবচেয়ে বড় পুরস্কার। আমি অনুভব করি, মানুষ আমাকে এতটা ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে। এটাই সবচেয়ে আনন্দের ও তৃপ্তির বিষয়।
প্রশ্ন: এখনও আপনি সেই একইরকম আছেন! আপনার কণ্ঠ একইরকম শুনি। এর পেছনে কোনও রহস্য আছে?
রুনা লায়লা: রহস্য কিছু নেই। আমি রেয়াজ করি, অনুশীলন করি। গায়কীর নতুন নতুন উপকরণ খুঁজি। নিজেকে প্রতিনিয়ত উন্নতি করার চেষ্টা চালিয়ে যাই।
প্রশ্ন:: দিনের নির্দিষ্ট কোনও সময়ে রেয়াজ করেন?
রুনা লায়লা: না, কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই। তবে নিয়মিতই রেয়াজ করি। খালি গলায় রেয়াজ করি, এক্ষেত্রে কঠিন গানগুলো বেছে নিই। সেগুলোতে নিজের মতো সুর-তালের চর্চা করি। এ প্রজন্মের যারা গান করছে, ওদেরও বলি যে, তোমরা এভাবেও অনুশীলন করতে পারো।
প্রশ্ন:: নতুন নতুন গানও নিশ্চয়ই শোনেন…
রুনা লায়লা: সবার গানই শুনি। নবীন-প্রবীণ সবার গান শুনি। সবার কাছেই কিছু না কিছু শেখার আছে।
প্রশ্ন: গান গাওয়ার পাশাপাশি আপনি সুরও করেন। নতুন গান বা সুর নিয়ে কিছু ভেবেছেন?
রুনা লায়লা: হ্যাঁ, চিন্তা-ভাবনা আছে। সামনে নিজের সুর করা গান নিয়ে কাজ করবো। এর আগে আশা ভোঁসলে, আদনান সামি ও রাহাত ফতেহ আলী খানকে দিয়ে গাইয়েছি। আরেকটা প্রজেক্ট নিয়ে চিন্তা করছি। দেখা যাক কতদূর কী করা যায়।
প্রশ্ন: আপনার নিজের পছন্দের পাঁচটি গান যদি নির্বাচন করতে বলি…
রুনা লায়লা: এটা তো বড় মুশকিল। আচ্ছা তবুও বলি, ‘যখন আমি থাকবো নাকো’, ‘বুকে আমার আগুন জ্বলে’, ‘যখন থামবে কোলাহল’, ‘শিল্পী আমি তোমাদেরই গান শোনাবো’ এবং ‘আয়রে মেঘ আয়রে’।
প্রশ্ন: বর্তমান সময়ে গানের ভিউ নিয়ে মাতামাতি হয়। এ নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী?
রুনা লায়লা: আমরা যখন নিয়মিত গান করেছি, তখন তো ভিউজের কোনও ব্যাপার ছিল না। রেডিওতে বাজতো, পরে টিভি আসার পর টিভিতে প্রচার হতো। তারপরও আমাদের গান জনপ্রিয় হয়েছে। আমাদের সমসাময়িক এখনও অনেকে গাইছে। আমি ভিউ কমবেশি বুঝি না। গান যদি ভালো হয় তাহলে মানুষের মন ছুঁয়ে যায়। এটাই তো যথেষ্ট।সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন।