মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২১ অপরাহ্ন
অভিনেত্রী ঈশিতা ভয়েস বিনোদন ডেস্ক:
রুমানা রশিদ ঈশিতা। নামটি শুনলেই মানুষের চোখে ভেসে ওঠে মিষ্টি হাসির একটি মুখ। যিনি প্রায় সারাটা জীবনই অভিনয় করে কাটিয়ে দিলেন। এখন হয়তো নিয়মিত নন, কিন্তু ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান পুতুল খেলার বয়সে। এরপর ক্যামেরার সামনেই কেটেছে কিশোরী, তরুণী ও এখন পরিণত বয়সের ঈশিতার জীবন। মাঝে মাঝে বিরতি, দর্শকের অপেক্ষার প্রহর শেষে আবার একটি দুর্দান্ত কাজে ফিরে সবটুকু ভালোবাসা নিংড়ে নেওয়াই যেন ঈশিতার কাজ।
দীর্ঘ পাঁচ বছর অভিনয় বিরতির পর গত বছর করেন রেদোয়ান রনির ‘ঝরা পাতার গল্প’ নাটকটি। এক নাটকেই দর্শক-সমালোচক সবার প্রশংসাধন্য হন ঈশিতা। এবার ঈদে এত নাটকের মধ্যে ঈশিতার কাজ মাত্র দুটি। আশফাক নিপুণের ‘ইতি, মা’ নাটকে প্রধান চরিত্রে। কিন্তু মাহমুদুর রহমান হিমির ‘কেন?’তে ক্যামিও চরিত্রে। দুটি কাজই ঈদের সেরা নাটকের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে।
শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও ঈশিতার অভিনয়ের প্রশংসা করছেন মন খুলে। তিনি বলেন, ‘আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। একেবারেই কম কাজ করি। তারপরও সবার যে ভালোবাসা পাচ্ছি তা ভাগ্যের ব্যাপার।’ সেরা কাজগুলোতেই তিনি থাকেন। কীভাবে আগে থেকে বোঝেন যে কাজটি অন্য মাত্রায় যাবে? জানতে চাইলে ঈশিতা বলেন, ‘গল্প বাছাই করার আগের ধাপ কিন্তু আমার কাছে গল্পগুলো আসতে হবে। তাহলেই সেখান থেকে হয়তো বেছে ভালোটা করতে পারব। এজন্য পরিচালক-প্রযোজকদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ যে তারা এক্সট্রা অর্ডিনারি গল্প হলেই আমাকে ভাবেন। আমার কাছে স্ক্রিপ্ট পৌঁছে দেন। আমি যেহেতু অন্য পেশায় নিয়োজিত, তাই চাকরি-সংসার-সন্তান সামলে চাইলেও অনেক পছন্দের কাজ করতে পারি না। কিন্তু যে গল্পটি শুনে মনে হয় তার মাঝে স্বচ্ছতা আছে, আমি চরিত্রগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি, মনে হয় এটা আমার বা আশপাশের কারও গল্প, তেমন নাটক হলে কষ্ট করে হলেও সময় বের করি।’
চর্চার মাধ্যমে অভিনয়ের উৎকর্ষ বাড়ে। কিন্তু এত দিন পরপর কাজ করলে চরিত্রটি ধারণ করতে কোনো অসুবিধা হয় কি-না জানতে চাইলে ঈশিতা বলেন, ‘সত্যি বলতে আমার ভয় লাগে। কিন্তু ক্যামেরা অন হলে আমি অন্য মানুষ হয়ে যাই। বলতে গেলে, আমার ঘরের চেয়ে ক্যামেরার সামনে বেশি কমফোর্টেবল আমি। তবে অবশ্যই তার আগে পরিচালক, লেখক, সহশিল্পীদের সঙ্গে অনেকবার কথা বলি। নিজেও চরিত্রটি অনেক সময় নিয়ে ভাবি। কারণ অভিনয় কম করি বলে সময় বেশি পাই একটি কাজকে যথাযথ সময় দিয়ে করতে। আমার প্রত্যেক পরিচালক খুব ধৈর্যশীল। একটি চরিত্র হয়ে ওঠার জন্য আমার মনে সহস্র প্রশ্ন উদয় হয়। সেগুলোর উত্তর হাসিমুখে দেন নির্মাতারা।’
ঈশিতার শুরু নাচ দিয়ে। গান শিখেছেন, মাঝে নাটক পরিচালনাও করেছেন। এখন এসব অঙ্গনে তাকে একদমই পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, ‘নাটক পরিচালনা বিরাট সময়ের ব্যাপার। এখন তা নিয়ে কোনোই পরিকল্পনা নেই। আর নাচটা ছোটবেলা থেকে শিখেছি বলে কোনো সময় না দিয়ে নেচে দিলাম সেটা আমি পারি না। এজন্য অনেক সময় ও চর্চার প্রয়োজন। তাছাড়া নাচ একা করা যায় না। সঙ্গত করতে অন্তত একজন তবলা বাদক লাগে। এগুলো এখন ম্যানেজ করা আমার জন্য কঠিন। বরং গান একাই চর্চা করা যায়। তাই মাঝেমধ্যে গান করি টুকটাক।’
এখন বিশ্ব বিনোদন ওয়েবের দিকে ধাবিত হচ্ছে। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন ঈশিতা? ‘উন্নত বিশ্বে টেকনোলজি, ইন্টারনেট সুবিধা অনেক বেশি। সেদিক থেকে আমরা পিছিয়ে। কিন্তু বিশ্ব বিনোদন এখন যেহেতু ওয়েবের দিকে চলে যাচ্ছে তাই আমাদের সেই সুবিধা ভোগ করতে হলে বিরাট লগ্নির দরকার। পুরো সিস্টেমটাকে ঢেলে সাজাতে হবে। তাহলে আমরা যারা সৃষ্টিশীল কাজ করি তারা নিজেদের নানামাত্রিক চরিত্র, গল্প, প্রেক্ষাপটে নিজেকে মেলে ধরতে পারব। একজন শিল্পীর জন্য এর চেয়ে আর বড় চাওয়া কিছু হতে পারে না।’
সূত্র:দেশরূপান্তর।
ভয়েস/জেইউ।